পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্পূর্ণ পূজাকেই সত্য বলে সহজে উপলব্ধি করি। হৃদয়বৃত্তিই মেয়েদের স্বভাবে একান্ত প্রবল, এই জন্ত্যে যে সাধনায় আর সমস্তকেই তিরস্কৃত করে একমাত্র ভক্তিবৃত্তিরই পরিতৃপ্তিকে বড়ো করে তোলা হয় মেয়েদের পক্ষে সেটাই হয় তো সহজ । তাই ভাবি মেয়েদের পূজা আরাধনায় ভক্তি ছাড়া মানবপ্রকৃতির অন্য সমস্ত ঐশ্বৰ্য্যই যদি বজ্জিত হয় তবে সেটা অগত্যা স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া হয়ত উপায় নেই। কিন্তু মানুষের এই সব ঐশ্বৰ্য্য কার দেওয়া ? যিনি দিয়েচেন তার কাছেও কি এর আদর নেই ? আমাদের দেশে পূজায় বিদেশী ফুল অব্যবহার্য্য, কিন্তু সে ফুল ফুটিয়েছেন কে ? ভক্তরা যদি তাকে অবমাননা করে তবে সেটা পৌছয় কোথা ? ঠাকুরকে আমরা যে অলঙ্কার দিই তার রত্বগুলি ঠাকুরেরই সৃষ্টি ; আমাদের পূজা তাকে ভূষণ পরায়,— সেই ভূষণের রত্নগুলি আমাদের মনে, সে তো একটি রত্ব নয়। যত রত্ব সাজাতে পারব ভূষণের মূল্য ত ততই বেশি হবে— অর্থাৎ পূজার ষোড়শোপচার ত ততই পূর্ণ হবে । রামচন্দ্রের পূজায় একশো পদ্ম থেকে একটি পদ্ম কম পড়েছিল বলে বিপত্তি ঘটেছিল । মানবপ্রকৃতিতেও একশো পদ্মই আছে, সবগুলিই পুজায় লাগে। কে বলবে তার নিরেনকবইটাকে বাদ দিলেই ভগবানকে খুসি করা হবে ? তবে তিনি এত অপব্যয়ের আয়োজন করেচেন কেন ?— চিঠি লেখার সময় করা আমার পক্ষে সহজসাধ্য নয় সেই জন্যে বলে রাখচি চিঠি লিখতে পারি বা না পারি তোমার জন্য আশীৰ্ব্বাদ রইল । ইতি ১৬ শ্রাবণ 〉○○ケ মাম। 8 o Q.