পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছি, ছি ) আপনি মহৎ অস্তঃকরণ নিয়ে আমাকে এতটা প্রশ্রয় দেন, তাই আপনার কাছে আমার কোনো লজ্জা— কোনো আবরণ নেই। যে চোখে একবার দেখে ফেলেছি, তা তো আর বদলায় না, সেইজন্যে এখন সম্পূর্ণরূপেই ঐ চরণে আত্মনিবেদন করেছি, আপনার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে । কিন্তু, কল্পলোক ছেড়ে একবার বাস্তবরাজ্যে নেমে এলে তখন এই পার্থক্যটা বিশেষভাবেই পীড়াদায়ক হয়ে পড়ে। তখন কি আর আপনার সামনেই দাড়াতে পারি ? কিন্তু, একমাত্র ভরসা, আপনার দয়া এবং স্নেহ । তাই বলছিলাম, মা তার মুর্থ মেয়েকে আপনার মত করুণার চোখে দেখবেন কি ? মা যদি দয়া করে? আমার সব ক্রটি মার্জন করেন, তা হলে সেটা আশাতীত সৌভাগ্য মনে করব। আর একদিন আপনার চরণদর্শন করতে ইচ্ছা করেছি, কিন্তু, পরাধীন অবস্থা, কাজেই ঠিক করে কিছু বলতে পারছি না। দাদা, দর্শন পাই আর না পাই, আপনার চরণপ্রাস্তে যেন আমার বাসা থাকে, যখন আসি, আশ্রয় পাই যেন । দাদা আমার, তৃষ্ণাৰ্ত্ত পথিক পাস্থপাদপের গাত্র-নিবার হ’তে জল খেতে চেয়েছিল, পেল না । তার ঘরের জলসত্ৰ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু, আর কেন, সুথের অভিলাষ সৰ্ব্বত্রই বর্জনীয়। স্বতরাং ওই রাতুল চরণ দুখানি আমার প্রণম্য হয়েই রইলেন । খেলায় কাজ নেই আর । হে ঋষি,— আমার কবি আমার ইষ্টদেবতার অঙ্গে লীন হয়ে রয়েছেন, যখন তাকে প্রণাম করব, সেই প্ৰণামেই কবিকে প্রণাম করা হবে । যখন সেই চিরকিশোরের সুন্দর চরণকমল আমার লীলাম্পদ হয়ে শিরে, নেত্ৰে, ললাটে, কপোলে পেলব স্পর্শ দান করবেন, তখন আমি আমার কবির স্নেহস্পর্শ যুগপৎ অনুভব করব । প্রণাম । নিবেদন ইতি সেবিকা