পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বস্তুরূপসমূহের মধ্যে অসীম অব্যক্ত অথচ সুসঙ্গত সুষম স্বল্প পরমাত্মা রূপে ঈশ্বরকে উপলব্ধি করিয়াছেন। তিনি বাস্তববাদী, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি -সম্পন্ন ও অতিপ্রাকৃত বিষয়ে সংশয়ী হইয়াও ভাবনেত্ৰে শ্ৰীভগবানকে সমস্ত মানুষের মধ্যে, বিশ্বপ্রকৃতির মধ্যে, সহসা বিজলীচমকে কচিং উদ্ভাসিত হইতে দেখিয়াছেন । গুণীর গুণের মধ্যে র্তাহার গুণগরিমা প্রত্যক্ষ করিয়াছেন । কৰ্ম্মীর কৰ্ম্মে, ত্যাগীর ত্যাগে, জ্ঞানীর জ্ঞানে, প্রেমিকের প্রেমে, সকলের সমস্ত সদগুণের মধ্যে, তিনি র্তাহারই সদগুণের বিকাশ সাক্ষাৎ অনুভব করিয়াছেন। আবার মানুষের ও প্রকৃতির অধৰ্ম্মাত্মক প্রলয়াত্মক বিভীষিকাময় বীভৎসরূপের মধ্যেও তিনি ব্রহ্মেরই প্রলয়ঙ্কর ভীষণ রুদ্ররূপ দেখিয়াছেন। এখানে তিনি সাধক, তপস্বী, মরমিয়া ভক্ত। র্তাহার ব্রহ্ম সৰ্ব্বময়, সৰ্ব্বরূপ, সৰ্ব্বকৰ্ম্মা, ভীষণ ও মধুর । অষ্টম এক রবীন্দ্রনাথ । যিনি তুষ্ণীভূত, নিমীলিতনেত্র, মৌনী, বিবিত্ত, চিন্তাশীল, একক। র্তাহার মনের মধ্যে যে কি আছে, কেহই তাহ। বলিতে পারে না । তিনি কি ভাবে নিমগ্ন, তিনিই জানেন । আর এই-সমস্ত রূপেরই যথাযথ সংমিশ্রণে এক রবীন্দ্রনাথকে আমরা দেখি, যিনি অতিথি অভ্যাগত আগন্তুকের প্রতি গৃহকৰ্ত্তা রূপে অথবা সমাজনেতা রূপে, কিংবা পরিত্রাজক অবস্থায় আপনিই অন্যের গৃহে সম্মানিত অতিথি অভ্যাগত আগন্তুক রূপে, সাধারণভাবেই মানুষের সহিত সামাজিকতা শিষ্টাচার ভদ্রতা ও সৌজন্যের আদান প্রদান করিয়া থাকেন। এখানে তিনি সকল সময়ে অকৃত্রিম হইতে পারেন না । 8>●