পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রচনা করিয়া বৰ্ম্মাবৃত, কিন্তু এই বৰ্ম্মাবৃত অবস্থায়ই তিনি সকলের সহিত আদান-প্রদান-পরায়ণ ন কৌতুকী সখা, তিনি সেবাব্রতী গৃহস্থ, তিনি পরোপকারী সুহৃদ, তিনি কৰ্ত্তব্যপরায়ণ কৰ্ম্মযোগী। এ ক্ষেত্রে আপনাকে অভিনেতার ন্যায় সাধনা-দ্বারাই, নানা ভাবে ভাবনায় ভবিতবং করিয়া, নানা জনের মনোরঞ্জনে অথবা মানভঞ্জনে তিনি অভিনিবিষ্ট । ইহার মধ্যে ষে আস্তরিকতা নাই এ কথাও বলা যায় না। বরং ইহাই বিস্ময়ের বিষয় যে, এমতাবস্থাতেও তিনি আন্তরিক সহৃদয় পুরুষ । স্বৰ্গীয় মহামহোপাধ্যায় প্রমথনাথ তর্কভূষণ মহাশয়ের মতে রবীন্দ্রনাথ মহাসমুদ্রবিশেষ। র্তাহাকে আয়ত্ত করা সহজ নহে । তাহার তত্ত্ব -নির্দেশ অভিজ্ঞ অন্তরঙ্গ জনের পক্ষেও সম্পূর্ণ সম্ভব মহে । কেননা আপাতদৃষ্টিতে পরস্পরবিরোধী বহুভাব-সম্বলিত বহু রূপেই আপনাকে তিনি দেশ কাল পাত্র -অনুসারে, অবস্থা-অনুসারে, বিভিন্ন আকারে প্রকারে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহুধা প্রকাশিত করিয়াছেন। যদি পৌরাণিক তান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীতে কোনো হিন্দু তাহার চরিত্রের বিচার করেন, তিনি রবীন্দ্রনাথের মধ্যে একাধারে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের স্বষ্টি-স্থিতি-সংহারক অথচ বিশ্বপ্রকৃতিতে-বিহরণশীল সেই নটরাজের ছায়াই দেখিতে পাইবেন । এমন অদ্ভুত চরিত্র অন্য কোনো দেবতার মধ্যেই পরিলক্ষিত হয় না। বৈষ্ণব, শৈব, শাক্ত, সেীর, ব্রাহ্ম, বাউল, সুফী, বৌদ্ধ, ক্রীশান সকল ধৰ্ম্মের সত্তাই তাহার ধৰ্ম্মের মধ্যে নিহিত । আজ ধরিত্রী পারমাণবিক মারণাস্ত্রের ভয়ে শঙ্কিত। আজ মহাকাশযাত্রীরা গ্রহান্তরে গমনে উদ্যত । অণজ যদি মানুষ তাহার অন্তঃকরণকে রিপুমুক্ত ও নিদোয না করে, তবে মানুষই আজ বিশ্বসংহার করিয়া বসিবে । এখন মানুষের নিজের অন্ত:করণকেই ভয় করা উচিত । পৃথিবীর এই দুদিনে এই মহা-অশাস্তিশঙ্কিত সময়ে অসাম্প্রদায়িক নির্বিবশেষ ভাবে রবীন্দ্রনাথের বাণীকে অপ্রিয় না করিলে পৃথিবীর জনগণের চিত্তে ঈশ্বরে বিশ্বাস, ধৰ্ম্ম ভাব, পাপ 8ੇ