পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সার্থক হ’তে পারবে । এই যে বিচিত্ররূপী সমগ্র, এর সঙ্গে ব্যবহার রক্ষা করতে হ’লে একটি ছন্দ রেখে চলতে হয়, একটি সুষমা,— যদি তাল কেটে যায় তবেই সমগ্রকে আঘাত করি এবং তার থেকে দুঃখ পাই । বস্তুত যখনই কিছুতে উত্তেজনার উগ্রতা আনে তার থেকে এই বুঝি, ছন্দ রাখতে পারলুম না,– তাই সমগ্রর সঙ্গে সহজ যোগস্থত্রে জট পড়ে গেল । তখন নিজেকে স্তদ্ধ ক’রে জটা খোলবার সময় আসে । এমন প্রায়ই ঘটুতে থাকে সন্দেহ নেই কিন্তু তাই ব’লে জীবনের সহজ সাধনার প্রশস্ত ক্ষেত্রকে সঙ্কীর্ণ ক’রে নিজেকে নিরাপদ করা আমার দ্বারা ঘটল না । বিশ্বে সত্যের যে বিরাট বৈচিত্র্যের মধ্যে আমরা স্থান পেয়েছি তাকে কোনো আড়াল তুলে খণ্ডিত করলে আত্মাকে বঞ্চিত করা হবে এই আমার বিশ্বাস। যদি এই বিরাট সমগ্রের মধ্যে সহজ বিহার রক্ষা ক'রে চলতে পারি তবে নিজের অগোচরে স্বতই পরিণতির পথে এগোতে পারব— ফল যেমন রৌদ্রে বৃষ্টিতে হাওয়ায় আপনিই তার বীজকে পরিণত ক’রে তোলে । আমি তাই নানা কিছুকেই নিয়ে আছি— নানা ভাবেই নানা দিকেই নিজেকে প্রকাশ করতে আমার ঔৎসুক্য । বাইরে থেকে লোকে মনে ভাবে তাদের মধ্যে অসঙ্গতি আছে, আমি তা অতুভব করি নে । আমি নাকি গাই, লিখি, আঁকি, ছেলে পড়াই— গাছপালা আকাশ আলোক জলস্থল থেকে আনন্দ কুড়িয়ে বেড়াই । কঠিন বাধা আসে লোকালয় থেকে— এত জটিলতা এত বিরোধ বিশ্বে আর কোথাও নেই। সেই বিরোধ কাটিয়ে উঠতে হবে, জীবনের শেষ দিন পর্য্যন্ত আমার এই চেষ্টার অবসান হবে না। আমার নিজের ভিতর থেকে আশ্রমে যদি কোন আদর্শ কিছুমাত্র জেগে থাকে তবে সে অাদর্শ বিশ্বসত্যের অবারিত বৈচিত্র্য নিয়ে। এই কারণেই কোনো একটা সঙ্কীর্ণ ফল হতে হাতে দেখিয়ে লোকের 8>气