পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হবে— উঠে স্নান করে বেরিয়ে পড়লুম। আমাদের সমাজপাড়ার পশ্চিম দিক দিয়ে সরকার লেনের রাস্তায় । গলিতে তথনো গ্যাসের অালে৷ জলছে । জোড়ার্সাকোয় গিয়ে দেখি দোতলার ঘরে আলো জলছে । গরমের দিন, দরোয়ানরা বাইরে থাটিয়াতে শুয়ে । তাদের জাগিয়ে দরজা খুলিয়ে উপরে গেলাম। সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে সিড়ির উপরের জানলা দিয়ে দেখলুম বসবার ঘরের উত্তর-পুবের দরজার সামনে টেবিলে বসে কবি লিখছেন । পুব দিকে মুখ করে বসে আছেন । পাশে একটা টেবিল-ল্যাম্প জলছে । আকাশ একটু ফর্সা হয়েছে। কিন্তু ঘর তখনো অন্ধকার । আমি ঘরে যেতেই মুখ ফিরিয়ে বললেন, কী এসেছে ? এই বলে আবার লিখতে আরম্ভ করলেন । দু-তিন মিনিট । তারপরেই একখানা কাগজ হাতে দিয়ে বললেন পড়ে । বড়লাটকে লেখা নাইটহুড পরিত্যাগ করার চিঠি । আমি পড়লুম। কবি তখন বললেন– সারারাত ঘুমাতে পারিনি। বাস এখন চুকলো । আমার যা করবার, তা হয়ে গিয়েছে। মহাত্মাজি রাজি হলেন না পাঞ্জাবে যেতে । কাল তাই নিজেই গিয়েছিলুম চিত্তরঞ্জনের কাছে । বললুম যে, এই সময় সমস্ত দেশ মুখ বন্ধ করে থাকবে এ অসহ । তোমরা প্রতিবাদ সভা ডাকে । আমি নিজেই বলছি যে, আমি সভাপতি হবো । চিত্ত একটু ভেবে বললে, বেশ । আর কে বক্তৃত৷ দেবে ? আমি বললুম, সে তোমরা ঠিক করে । চিত্ত আরেকটু ভাবলে – বললে, আপনি যদি সভাপতি হন, তবে তারপরে আর কারুর বক্তৃতা দেওয়ার দরকার হয় না। আপনি এক বললেই যথেষ্ট । আমি বললুম, তাই হবে। এবার তবে সভা ডাকে । তখন চিত্ত বললে, আপনি এক যখন বক্তৃতা দেবেন, আপনিই সভাপতি, তখন সব চেয়ে ভালো হয় শুধু আপনার নামে সভা-ডাকা । বুঝলুম ওদের দিয়ে হবে না । তখন বললুম, আচ্ছা আমি ভেবে দেখি । এই বলে চলে এলুম। অথচ ○ 〉●