পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

না, তিনিই দেন । আমি সত্যই তোমাকে বলচি কোনো উচ্চ আসনে বসবার জন্যে আমার অন্তরতম আত্মার সত্য আকাজক্ষণ নেই—- কিন্তু এই আসনটাকে যদি অনেকে মিলে অভ্যস্ত করিয়ে তোলে তা হলে বাইরের দিক থেকে সে মানুষকে পেয়ে বসে। বাইরের সঙ্গে অন্তরের এই অসামঞ্জস্য এ ক্ষেত্রে কোনো মতেই কল্যাণকর নয় । এইজন্যেই মাঝে মাঝে আমার এক একবার বিদ্যালয় থেকে দূরে চলে যেতে ইচ্ছা করে । এবার এই হিমালয়ে এসে আমার মনে হচ্চে, সকলের সব দাবি কাটিয়ে কিছুকাল একলা এইরকম জায়গায় থেকে গেলে আমার যা আবশ্বক তা অনেকটা পুরণ হতে পারে। দৃষ্টিকে সৰ্ব্বতোভাবে নিজের দিক থেকে ফিরিয়ে দিতে পারলেই সত্য দৃষ্টি পাওয়া যায়— আনস্তের আনন্দরূপ অমৃতরূপ তখনি চারিদিকে প্রকাশিত হয়ে ওঠে । সেই রূপটিকে আমি চোখ মেলে দেখে যাব— এরই জন্যে আমার সমস্ত জীবনের সমস্ত ক্ৰন্দন । এই কথাটাকেই সুস্পষ্টভাবে না বুঝেও কৌতুকের ছন্দে আমি লিখেছিলুম— আমি চাইনে হতে নবযুগে নব বঙ্গের চালক যদি পরজন্মে পাই রে হতে ব্রজের রাখালবালক । ব্রজের বালকের সেই সরল দৃষ্টিটি আছে যাতে না বুঝে না জেনেও সমস্ত সুন্দর করে দেখতে পাওয়া যায়— যে দৃষ্টির কাছে অনন্ত আপনিই দিনে রাতে কাজে খেলায় অতি সহজ হয়ে আপন হয়ে ধরা দেন । কিন্তু রাখাল বালকটাকে গুরুমশায়ের আসনে কে বসালে ! এ কৌতুক তার সঙ্গে কে করচে ! এ কৌতুক চিরদিন কখনই চলতে পারে না— সে যে রাখাল এ কথাটা কখনই চিরদিন চাপা থাকবে না— ধরা পড়বেই— তার গুরুগিরি একদিন সমস্ত ভেঙে যাবে। এ গুরুগিরি 5 ২২