পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শোনবার অত জেদ কেন ? আমি বললাম, আপনার যা মনে আছে তা একটু শোনান। — আমাকে নাছোড়বান্দা দেখে তিনি মিঞা তানসেনের রচিত দরবারী কানাড়ায় একটি চৌতাল চার-তুক-বিশিষ্ট ধ্রুপদ গাইলেন । এই গানে তানসেন ও আকবর বাদশাহের নাম উল্লিখিত • • গান শুনে আমার বিস্ময় শতাধিক পরিমাণে বধিত হল । কেননা তিনি গাইলেন তানসেনের পুত্রবংশের বন্দেজী মীড়বহুল একটি নিখুঁত উচ্চাঙ্গের ধ্রুপদ । আমি ইতিপূর্বে মহম্মদ আলী খাঁ সাহেব ব্যতীত এরূপ ঢঙের ধ্রুপদ কখনো শুনিনি । সম্ভবতঃ রাধিকা গোস্বামীজি এই রীতিতেই গাইতেন । এই জাতীয় ধ্রুপদকে আমরা গৌড়হার বাণীর ধ্রুপদ ব’লে থাকি । আমি আমার মনের কথা তাকে নিবেদন করলাম ও বললাম, “যিনি এরূপ গান গাইতে পারেন তিনি যদি ওস্তাদ না হন, তবে ওস্তাদ কাকে বলব ? রবীন্দ্রনাথ ঈষৎ হাস্যসহকারে বললেন,— শুনে শেখা বহু গান তিনি ভুলে গেছেন, তবে বোধ করি শ'খানেক এখনও তার মনে আছে।” যথাসময়ে প্রণামান্তে র্তার নিকট হতে বিদায় গ্রহণ করলাম । --সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি ভেবে এসেছি— রবীন্দ্রনাথকে সবাই কবিগুরুরূপে মানে, অনেকে তাকে আধুনিক সংগীতের গুরু ব’লে স্বীকার করেন, কিন্তু ওস্তাদ রবীন্দ্রনাথকে জেনেছে কয়জন ? —তেীর্ষত্রিক (মাসিক পত্র ), পৃ ১১৭-১৮ রবিপ্রদক্ষিণ সংখ্যা, মে ১৯৬৬ ও নিয়রেখা আমাদের । 6 88