পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অত্যন্ত সহজ হয়েচে । তার কারণ তোমার মনের মধ্যে এমন একটি স্বচ্ছতা আছে কোনোরকমের সংস্কারের বাধায় তাকে ছায়াবৃত করতে পারে নি, তোমার স্বাভাবিক বুদ্ধিশক্তি সকল রকম বাধার মধ্যেও তোমাকে মুক্ত রেখেচে । আমার সম্বন্ধে কঠোর বিরুদ্ধতা থাকাই তোমার পক্ষে স্বভাবসঙ্গত ছিল, আমার দেশের লোকের অনেকেরই তাই আছে । কিন্তু অভ্যাসের অাচারের মতের নানাপ্রকার বাধা সত্ত্বেও সে সমস্ত পার হয়েও তুমি আমার কাছে তাসতে পেরেচ সে তোমার বুদ্ধির অসামান্ত উদারতাবশত। প্রকৃত আত্মীয়তার মিলনক্ষেত্র এই উদারতায়, মতের মিল প্রভূতিতে নয়। চিঠিতে তোমাদের সাধনার কথা তুমি যে রকম করে প্রকাশ করেচ তাতে আমি গভীর আনন্দ পেয়েছি,-— তোমার নিজেকে নিপুণ ভাষায় সুস্পষ্ট করে আমার গোচর করতে পেরেচ । মানুষের প্রতি আমাদের ঔদাসীন্য সেইখানেই যেখানে সে অামাদের কাছে অস্পষ্ট । যে হয়েচে স্থপ্রত্যক্ষ তাকে আমরা অস্তরের মধ্যে অনায়াসে গ্রহণ করি । তুমি যে পথেই চলো না কেন, সে পথ আমার নির্দিষ্ট না হলেও অামি লেশমাত্র ক্ষোভ করব না এ কথা নিশ্চিত জেনে । কিন্তু সে পথ তোমার প্রকৃতিবিরুদ্ধ না হয়, সে পথে তোমার সম্যক চরিতার্থতা ঘটে, তুমি শাস্তি পাও এই আশা করি। আমাকে চিঠি লিখতে যদি তোমার বাধা ঘটে বা অবকাশ না পাও আমি কিছুই মনে করব না । তুমি স্বচ্ছন্দ মনে সহজে নিজের জীবনকে গ্রন্থিমুক্ত করে আত্মপ্রতিষ্ঠিত হও এই ইচ্ছামাত্র আমার মনে রইল। ইতি ১১ শ্রাবণ ১৩৩৮ দাদা