পাতা:চিঠিপত্র (নবম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কল্যাণীয়াসু শেষ চিঠিতে তোমাকে কি লিখেছিলুম মনে নেই কিন্তু তোমার চিঠি থেকে বোধ হল তোমাকে ক্ষুব্ধ করেচে। তুমি নিশ্চয় জেনো তোমাকে কোনো বিশেষ পথে প্ৰবৰ্ত্তন করবার জন্তে আমার মনে একটুও তাগিদ নেই। সত্য বলে অস্তরে যা আমি উপলব্ধি করি তা আমি সকলকে বলিনে— এখানে সত্য বলচি তাকে যা সকল সত্যের গোড়ায় । আমার ভিতরকার দরজা যে চাবিতে খোলে, সে চাবি সকলের কুলুপে লাগবে না । তা ছাড়া গুরুর পদ আমার নয় সে অামি নিশ্চিত জানি । আমি অনুভব করি, অামি কথা কই এইটেই আমার স্বধৰ্ম্ম । তোমার চিঠিতে আমি কথা কয়ে গেছি সেটা শুনিয়েচে অনুশাসনের মতো । কিন্তু প্রকাশ করা যদিও আমার স্বভাবসঙ্গত, প্রচার করা একেবারেই নয়। যে উপলব্ধিতে তুমি গভীর আনন্দ পেয়েচ সে তোমার আপনারই জিনিষ । ধার করা জিনিষ নিয়ে তোমার চলবে না, এমন কি সে যদি দামী জিনিষ হয় তবুও না। প্রচার করতে যাদের অত্যন্ত উৎসাহ তারা এই কথাটা বুঝতে পারে না, এই জন্যে তারা সংসারে কেবলি বাহ্যিকতার আবর্জনা জমায় । সত্য অস্তরের হলে তবেই খাটি হয় তবেই তাতে শান্তি তাতে স্বাস্থ্য তাতে সৌন্দৰ্য্য তাতে আনন্দ, অন্ন পাকযন্ত্রে এসে তবেই প্রাণের সামগ্রী হয়ে