পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[૧૨] \ë পোস্টমার্ক, শান্তিনিকেতন ১৩ এপ্রিল, ১৯১৭ কল্যাণীয়েৰু প্রমথ, অর্জুনের একটা সময় এসেছিল যখন সে নিজের গাণ্ডীর নিজে আর তুলতে পারেনি। আমার কি গাণ্ডীবের কারবার ছেড়ে দেবার দিন আসবে না, মনে করচ ? মাঝে মাঝে নোটিস পাই, বুঝতে পারি মানে মানে আসর ছেড়ে দেওয়াই সুবুদ্ধির কাজ। কিছুদিন থেকে আমার কানের মধ্যে কি একটা উৎপাত হয়েচে তাতে যে কেবল শোনা কমেচে তা নয় মগজের মধ্যে জড়তা এসেচে– কিছুতে লিখতে পড়তে গা লাগচে না। এই ত গেল প্রথম দফা । দ্বিতীয় হচ্চে এই যে, এতদিন যখন কলম সতেজ ছিল তখন অন্য সকল কাজ অবহেলা করে তার পিছনেই দিন কাটিয়েচি । এখন কলমের চঞ্চলতা আপনিই কমে গেছে বলে বিদ্যালয়ের কাজে সমস্ত মন ঝুকেচে । আমি যে-বয়সে এসে পৌঁচেছি, সে-বয়সের ভয়ানক একটা সঙ্গহীনতা আছে। এই মরুভূমির মাঝখানে স্থাণু হয়ে বসে থাকা, না মুখকর, না স্বাস্থ্যকর। তবু যতদিন লেখার আবেগ প্রবল ছিল ততদিন নিজের রচনালোকের মধ্যে ঘুরে ঘুরে বেড়ানো যেত। এখন বুঝতে পরিচি সেই লেখার উপর নিয়ত ভর করবার মত জোর তার নেই। তাই, নিতান্ত পথে বেরিয়ে না-পড়ে আমার জীবনের একটা-কোনো আশ্রয় পাকা করে নিতে হবে । আমি ছেলেগুলোকে সত্যিই ভালোবাসি অথচ তাদের সঙ্গে আসক্তি