পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[૭૭] હૈં পোস্টমার্ক শাস্তিনিকেতন কল্যাণীয়াসু তোরা দুজনে আমার নববর্ষের আশীৰ্ব্বাদ গ্রহণ করিস। সকালে মন্দিরের কাজ সেরে এসে লিখতে বসেছি। কলকাতা থেকে নববর্ষ বিদায় নিয়েছে । সেটা তেমন বেশি শোচনীয় নয় যেমন শোচনীয় মৃত পদার্থকে অঁাকড়িয়ে পড়ে থাকা । শ্রদ্ধয়া দেয়ং অশ্রদ্ধয়া আদেয়ম। এ কথাটা অৰ্ঘ্য দেওয়া সম্বন্ধেও খাটে। অশ্রদ্ধার দানে অশ্রদ্ধাকেই মূল্য দেওয়া হয়। আজ যদি আশ্রমে থাকতিস তাহলে দেখতে পেতিস এখানে এটা বেঁচে আছে । তার মানে এই নববর্ষের দিনের সঙ্গে বাকি ৩৬৪টা দিনের নাড়ীর যোগ আছে। কলকাতার পাজিতে সে বৎসরটাই নেই যে-বৎসরের প্রথম দিনকে বিশেষ ভাবে গণ্য করা চলে। আসল কথা, একটা পরিবারের কোমরের সঙ্গে টাকার শৃঙ্খলে বাধা আদি ব্রাহ্ম সমাজ একটা প্রকাণ্ড বিড়ম্বন । আর কিছুকাল পরে স্বয়ং কটিটাই অন্তধর্শন করবে, আর যিনি বন্দী ছিলেন র্তারও ঠিকান পাওয়া যাবে না। কেবল শিকলটা ঝমােঝম করবে। প্রথা জিনিষটা যেখানে সত্যকে বিদ্রুপ করে সেখানে সেই প্রথার মতো লজ্জাজনক ব্যাপার আর কিছুই নেই। শান্তিনিকেতনে ১১ই মাঘের উৎসব করতে আমার একটুও সঙ্কোচ বোধ হয় না কিন্তু আমাদের বাড়িতে অর্থহীন অনুষ্ঠানের আড়ম্বর আমাকে বড় লজ্জা দেয়।