পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র X 8X হয়ে গেছে, কালের মস্ত ঘড়িটা বন্ধ, বেলা চলচে না— তবুও আমি বন্ধ হয়ে আছি ছুটি পাচ্চি নে । আজ এই কৰ্ম্মহীন আবাঢ়ের দীর্ঘদিনে পৃথিবীর সমস্ত অজ্ঞাত অপরিচিত_দেশেরমধ্যে বেরিয়ে পড়লে বেশ হয়— আজ ত আর কোন দায়িত্বের কাজ কিছুই নেই– সংসারের সহস্ৰ ছোটখাট কৰ্ত্তব্য আজকের এই মহাদুৰ্য্যোগে স্থানচু্যত হয়ে অদৃশু হয়েছে— আজ তেমন সুযোগ থাকলে কে ধরে রাখতে পারত ? যে সকল নদীগিরি নগরীর মুন্দর বহুপ্রাচীন নাম বহুকাল থেকে শোনা যায়-মেঘেরউপরে বসে সেগুলো দেখে আসতুম। বাস্তবিক কি মুন্দর নাম । নাম শুনলেই টের পাওয়া যায় কত ভালবেসে এই নামগুলি রাখা হয়েছিল এবং এই নামগুলির মধ্যে কেমন একটি শ্রী ও গাম্ভীৰ্য্য আছে । রেব, শিপ্রা, বেত্রবর্তী, গম্ভীরা, নিবির্বন্ধ্যt — চিত্রকূট, আম্রকুট, বিন্ধ্য ; দশার্ণ, বিদিশা, অবন্তী, উজ্জয়িনী ; এদেরই সকলের উপরে নববর্ষার মেঘ উঠেছে, এদেরই যুখীবনে বৃষ্টি পড়চে এবং জনপদবধুর কৃষিফলের প্রত্যাশায় স্নিগ্ধনেত্রে মেঘের দিকে চাচ্চে। এদের জমুকুঞ্জে ফল পেকে আকাশের মেঘের মত কালো হয়ে উঠেছে— দশার্ণ গ্রামের চতুদিকে কেয়াগাছের বেড়াগুলিতে ফুল ধরেছে— সেই ফুলগুলির মুখ সবে একটুখানি খুলতে আরম্ভ করেছে। মেঘাচ্ছন্ন রাত্রে উজ্জয়িনীর গৃহস্থ ঘরের ছাদের নীচে পায়রাগুলি সমস্ত ঘুমিয়ে রয়েছে— রাজপথের অন্ধকার এমনি প্রগাঢ় যে সূচি দিয়ে ভেদ করা যায়। কবির প্রসাদে আজকের দিনে যদি মেঘের রথ পাওয়াই গেল তাহলে এসব দেশ না দেখে কি