পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[*] હૈં ভাই প্রমথ হঠাৎ আজ প্রাতঃকালে আমার দক্ষিণ কাধে বাতের মত হয়েছে – মাথা এবং হাত নাড়া হুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে— এবং পৃষ্ঠদেশ– যাকে সৰ্ব্বদাই পশ্চাতে ফেলে রেখেছি— যাকে চক্ষেও দেখিনে— বহুপরিশ্রমের পর চৌকিতে ঠেসান দেবার সময় ব্যতীত যার অস্তিত্ব কখনো অনুভব করা যায় না সেই সৰ্ব্বপশ্চাদ্বত্তী পৃষ্ঠদেশই আপনাকে চেতনারাজ্যের একাধিপতি করে রেখেছে । তোমাকে এই যে ক’লাইন চিঠি লিখলুম এর মধ্যে অনেক মুখভঙ্গী এবং আৰ্ত্তনাদ অব্যক্তভাবে প্রচ্ছন্ন আছে । বৰ্ত্তমান এই ব্যাধিটার তুলনায় মানসীর সমস্ত ঔদাস্ত এবং নৈরাশ্ব অত্যন্ত মিথ্যা এবং নিতান্ত সৌধীন বলে মনে হচ্চে । পিঠ এবং র্কাধকে হৃদয় এবং আত্মার চেয়ে অনেক বেশি মনে হচ্চে । অতএব আজ মানসী সম্বন্ধে ঠিক সমালোচনাটা আমার কাছ থেকে প্রত্যাশা করা যেতে পারে না । ভাল করে ভেবে দেখতে গেলে মানসীর ভালবাসার অংশটুকুই কাব্যকথা— বড় রকমের মুন্দর রকমের খেলা মাত্র— ওর আসল সত্যিকথাটুকু হচ্চে এই যে, মানুষ কি চায় তা কিছু জানে না— এক ঘটি জল চায়, কি আধখান। বেল চায়, জিজ্ঞাসা করলে বলতে পারেন, আমি এমন অবস্থায় মনের সঙ্গে আপষে বোঝাপড়। করে কল্পনার কল্প বৃক্ষের মায়াফল পাড়বার চেষ্টা করচি।