পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র w®ግ হবেই, অতএব কেবল মুক্তি নিয়ে ত ঘর চলবে না, দায়িত্বও যে মানতে হবে । তা জানি, তাই যারা কলকব জার তত্ত্ব বোঝে, যারা মালগাড়ি ডিপার্টমেন্টের ভারপ্রাপ্ত, তাদের আমি ভালোই বলি। অথচ এ কথাও ত ভুললে চলবে না যে, মাল মানুষের, কিন্তু মানুষ নিজে মাল নয় । সেই নিজের জগৎটাকে কেবলি মালের জগৎ করে তুললে নিজেকে মানুষ চিনবে কেমন করে ? আজকাল তাই কেবলি ভাবচি, মাল বোঝাই করবার দায় আমি না নিলেও লোকসান বিশেষ হত ন, কিন্তু দায় খোলসা করবার যে অধিকার আমার ছিল সেটাকে নষ্ট করে আমি নিজের ভালো করিনি পরেরও যে বিশেষ উপকার করেচি ত বলতে পারিনে। অর্থাৎ তাদের উপকার করার চেয়েও আরো হয়ত কিছু করবার আছে, সেটা হয়ত বা আমার দ্বারা হতে পারত। নাইবা হতে পারত তাতেই বা কি । মনুষ্যলোকে তুই জাতের প্রাণী আছে,— কেজো আর অকেজো । এরা নিজের নিজের ধৰ্ম্মরক্ষা করে চলবে এদের প্রতি বিধাতার এই অনুশাসন ছিল । কারণ, ৰধৰ্ম্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধৰ্ম্মোভয়াবহ । কিন্তু সংসারে - কাজের দাবী এত বেশি যে বেকার লোকে আপন বেকার-ধৰ্ম্ম পালন করবার সুযোগ পায় না । কেজো লোকেরা সমস্ত পৃথিবীতে আপন কৰ্ম্মক্ষেত্র বিস্তার করে ভারি খুসি হয়— তারা জানে না অকাজের স্থান ও অবকাশ মারা গিয়ে তাদের কাজ বিগ ড়ে যাচ্চে । কিন্তু আজ আমার এই সুবুদ্ধি কেবল পরিভাপ জন্মাতেই পারে, আমাকে উদ্ধার করতে পারে না।