পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র । 80 পারিনে— আমার মধ্যে খুবই একটা প্রবল ব্যক্তিগত সত্ত আছে । বিশেষ মানুষ এবং বিশ্বমানুষ দুটোই আমার কাছে সবচেয়ে সত্য – পারিবারিক মানুষ এই দুইয়ের মাঝখানের প্রদোষান্ধকারের একটা জিনিষ—অামার কাছে ও সুস্পষ্ট নয়— এইজন্তে ওর উদ্দেশে অামার ত্যাগের উৎসাহ জাগে না । একদিন সেক্রেটারির পদ পেয়ে আদি ব্রাহ্মসমাজকে আমি বিশ্বের সঙ্গে যোগযুক্ত করে দিতে চেষ্টা করেছিলুম, যেই দেখলুম সেটা সম্ভবপর নয়, যে হেতুক ওটা আমাদের পারিবারিক জিনিষ, তখনি ওর জন্তে এক মুহূৰ্ত্ত বা এক পয়সাও খরচ করা অামার পক্ষে অপব্যয় বলে বেধি হল । কিন্তু আমার আশ্রমে ঐ জিনিষটাই— অর্থাৎ দেবতার অর্চনা— বিশ্বমানুষের নয়, পারিবারিক মানুষের নয়, কিন্তু ব্যক্তিগত মানুষের জিনিষ হয়েচে বলেই আমার হৃদয় আকর্ষণ করে নিয়েচে । আমি ছেলেদের ভালবাসি, সেই ভালবাসার সঙ্গে আমার পূজা মিশ্রিত হয়ে আমার কাছে বিশেষ রসের সামগ্রী হয়েচে, তাই একে সময় দিতে সামর্থ্য দিতে অামার কিছুমাত্র বাধে না । যাই হোক আমার মধ্যে এই ব্যক্তিগত সত্তা অত্যন্ত সজীব আছে বলেই মাঝে মাঝে কাজের কাকে ফঁাকে তার দাবী জেগে ওঠে। সে বলে, আমি উপবাসী থেকে কাজ করতে আর পারিনে, সে বলে, একলা পথে শেষ পৰ্য্যন্ত চলে ওঠা বড় কঠিন । এই জন্তেই, এই বাহিরের সংসারে যতদূরেই চলে আসি না কেন, সে যত বৃহৎ অনুষ্ঠান হোক, তার যত মহৎ গৌরব থাক তৰু তোদের 8