পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[૨૨] Prague কল্যাণীয়াসু তোর রাখী পেলুম । কিন্তু বিষম ঘোরে ঘুরে বেড়াচ্চি— কোনো বন্ধন কোথাও ধরে রাখচে না । অথচ একে মুক্তি বলে না— মন নিস্কৃতি চাচ্চে তবু গোলেমালে ছুটি কিছুতেই মেলে না । তাদর অভ্যর্থনার বিরাম নেই– সংসারে তার মূল্য যথেষ্ট আছে, কিন্তু তার চেয়ে মূল্যবান, শান্তিতে স্থির প্রতিষ্ঠা । নিজের মধ্যে এই এক দ্বন্দ্ব-– লোভী তারস্বরে বলচে যেটা পাচ্চ সেটা খুব করে নিয়ে নাও, কিন্তু তার উপরতলায় যে থাকে সে মন্দ্রস্বরে বলচে, ফুটে কলসিতে বারে বারে বৃথা জল ভরবার চেষ্টা না করে পূর্ণতার সমুদ্রে এক ডুবে তলিয়ে যাও । যে চক্র বাইরের পরিধিরেখায় ঘুরচে সে বলচে, “আমার সঙ্গে ঘোরো, সেই হচ্চে মজা ।” কিন্তু তার অস্তরের কেন্দ্রস্থলে যে আছে সে বলচে “আমার মধ্যে স্তব্ধ হও তাহলে একই সঙ্গে গতি স্থিতি দুইয়েরই পূর্ণ সামঞ্জস্য পাবে।” বুঝি স্পষ্ট, কিন্তু অবুঝটাকে বাধতে পারে কার সাধ্য ! কৃলের খবর জানি, আজ দিনের শেষে সেইখানেই তরী ভিড়োবার কথা, কিন্তু যখন সব পাখী বাসায় ফিরচে তখনো সূর্যাস্তের স্নান আলোয় স্রোতের টানে তুহু করে চলেচি– বাতাসে ভূপালীর স্বরে একটা ডাক শুনতে পাচ্চি, থামরে থাম, আয়রে আয়। এই সব উপস্থিত বরমাল্যের লোভ সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়ে চরম জয়মাল্যের জন্যে রাজদরবারে শেষ দাবী জানাবার জন্যে একান্ত ইচ্ছে করে। কিন্তু ছুটে ইচ্ছের দ্বৈরাজ্যের উপদ্রবে স্বারাজ্য মেলে না। একটা ইচ্ছের সঙ্গে