৩৫
[কালিগ্রাম। ১৯০২]
ওঁ
ভাই ছুটি
পথে অনেক বিঘ্ন কাটিয়ে আজ এখানে এসে পৌঁচেছি। প্রথমে ত দিন দুয়েক উল্টো বাতাস বইতে লাগল— তাতে বোটের পক্ষে নড়া-চড়া অসম্ভব হয়ে উঠ্ল। মৃদু মন্থরগমনে চল্তে চল্তে বিলের মধ্যে পড়া গেল। জান ত বিল সমুদ্রবিশেষ— চারিদিকে জল থৈ থৈ করচে মাঝে মাঝে ডোবা ধানের মাথা ভেসে আছে— মাঝে মাঝে এক একটা গ্রাম এক একটা ছোট দ্বীপের মত জলের উপর জেগে রয়েছে— গোরুগুলোর চরবার জায়গা নেই— মানুষগুলোর নড়বার স্থান নেই— ডোঙায় করে ডিঙিতে করে এগ্রামে ওগ্রামে যাতায়াত— তোমরা বোলপুরের মত জায়গায় থেকে এ রকম দৃশ্য কল্পনাই করতে পারবে না। চারিদিকে শেওলা কল্মীর দাম ভাস্চে— মাঝে মাঝে পদ্ম ও নাল—সেই সমস্ত মিশে এক রকম গন্ধ পাওয়া যাচ্চে— জলে কালো কালো পানকৌড়ি— মাথার উপর মেছো চিল উড়ে বেড়াচ্চে। সন্ধ্যার সময় চারি দিকে যখন অকূল স্থির জল ধূ ধূ করে মনের ভিতরটা একরকম উদাস হয়ে যায়। সমুদ্রের জলের ঢেউয়ের বৈচিত্র্য এবং জলের শব্দ আছে— এখানে তাও নেই— চারিদিক নিস্তব্ধ শূন্য ছবি— তারি মাঝখানে কেবল পালে
৬৬