পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 তুমি ভাই রবিকাকাকে চিঠি লেখ না কেন বল দেখি। একদিন চিঠি না পেলে রবিকাকা ভেবে অস্থির হন। তোমাকে তিনি রোজ একখানা করে চিঠি লেখেন আর তুমি কিনা মনে পড়লে তবে লিখবে। বড় অন্যায়। বেচারা রবিকাকা সব সহ্য করে থাকেন। কাউকে কিছু বলেন না। আমার বাপু বড় মায়া করে। রোজ সন্ধ্যা বেলায় আমাদের কাছে কত দুঃখু করেন। কাকিমা তুমি অনায়াসে একখানা করে রোজ সকালে কিম্বা রাত্তিতে বসে চিঠি লিখতে পার। এ তো পাঁচ মিনিটের কাজ এটুকু সময়ও কি পাও না? তুমি লিখেছ “আমি এখন কাজের লোক হয়ে পড়েছি” একেই কি কাজের লোক বলে? এটাও একটা মস্ত কাজ তা তুমি জান? সকল কাজ ছেড়ে আগে তোমার একাজ করা উচিৎ। এটা তোমার কর্ত্তব্য কাজ! কর্ত্তব্য কাজে অবহেলা করতে নেই। রবিকাকা দুদিন উপরি উপরি তোমার চিঠি পেয়ে ভারি খুসীতে আছেন। তিনি খুসীতে আছেন দেখলে আমাদের বেশ মনটা খুসী হয়। খুসীর চোটে নাচ গান করেন। দেখতো কাকিমা এরকম শুনতে তোমার ভাল লাগে না? রবিকাকা বলেন আমি রোজ চিঠি লিখে মরি আর একজন লোক বিদেশে আছে কেমন আছে তার কেউ খবর নেন না। ভারত উদ্ধার করতে যান কিন্তু আমার দশা যে কি হচ্ছে তার দিকে একবার চেয়েও দেখেন না? সত্যি বলছি রবিকাকা যখন এইসব বলেন তখন তোমার উপর আমার ভারি রাগ হয়। তোমার ভাই একটুও দয়ামায়া নেই তা বলছি। যাকগে ওসব কথা। আর তোমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারি নে। এবার থেকে কিন্তু রোজ রোজ রবিকাকাকে চিঠি লিখো।

৯২