পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শতগুণে বেড়ে উঠেছে প্রতিদিন তিল তিল করে তার স্নেহ যত্ন যা কিছু পেয়েছি সব এক সঙ্গে বুকের উপর চেপে ধরছে । খেতে হয় খাচ্ছি— কতকগুলি কর্তব্য আছে করছি। যত বেশী কাযকৰ্ম্মে ব্যস্ত থাকি তত ভাল মনে করে— সারাদিন কোন না কোন একটা কায নিয়ে আছি অবসরের সময়টা বড়ই পীড়ন করে । এমন lonely লাগে কি আর বলব । ছেলেদের দেখবার জন্য মনটা খুবই ছট্‌ফট্‌ করে । এখান থেকে ফিরে যেতে যেতে তারা কলকাতায় থাকৃবে কি না, থাকৃলেই বা যোড়াসাকো কি করে যাব । দুদিন দেরী হ’লে খবর পাঠিয়ে ডেকে নেবার লোক আর নেই। রাণীর জন্য আমার ভারি ভাবনা হয়েছে। একে তে ওর শরীর অত্যন্ত খারাপ তার পরে এই শোকটা সব চেয়ে ওরই বেশী লাগবে । ও মেয়ে, ভারি সহজে কাতর হয়ে পড়ে । একবার একটা পাখী পুষেছিল সে পাখীট। মারা গেলে যে কাতর হয়েছিল। কাউকে কিছু বলত না গুম্রে গুম্রে কেঁদে অস্থির হ’ত ওর স্বভাব ভারি চাপা । বেলার ঘর সংসার হয়েছে, স্বামী ও তার আত্মীয়দের জন্য একটা টান হ’য়েছে, শাশুড়ি আছে মায়ের অভাব কিছু পূরণ করবে । মীরা ও শমী ছোট অভাব অনুভব করবার ক্ষমতা তাদের এখনও ভাল করে হয়নি । রথী হাজার হলেও ছেলে— লেখাপড়া নিয়ে নানা কথায় নানা কাজে ভুলে থাকবার অবসর আছে। আমার বোধ হয় রাণীর সব চেয়ে কষ্ট হবে । বালিগঞ্জে থাকাতে আদৎ ঘটনাটা ভাল করে বুঝতে পারছে না । যোড়ার্সাকো গেলে ওর বেশী কষ্ট হবে । রবিকাকা একবার বলেছিলেন, আমরা বোলপুর যদি যে তুম তা হ’লে মীরাকে ও শমীকে আমার সঙ্গে দিতেন । আমি অবিশুি কিছু বলতে পারি নে আমার নিজের বাড়ি হ’লে রাণীকে জোর করে নিয়ে আস্তুম। এখানে যে রকম খোলা মাঠের হাওয়া আমার নিশ্চয় বিশ্বাস এ রকম কোন যায়গায় এলে খুব অল্প সময়ে ওর শরীর শুধরে যায় । কথাটা অসঙ্গত মনে হ’লে তুমি কিছু বোলো না | একবার মীরাকে দেবার কথা বলেছিলেন বলেই সাহস করে তোমার > > br