পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহিত ভোজনগৃহে আসিয়া কবি দেখিলেন, পাত্র পূর্ণ, ভোজ্যের কোনো অংশেই ক্রটি হয় নাই, সবই প্রস্তুত দেখিয়াই কবি মনে মনে ধন্যবাদ দিয়া গৃহিণীপনার সার্থকতা বুঝিতে পারিলেন । বন্ধু ভোজন করিলেন। নিপুণ গৃহিণীর বুদ্ধিমত্তায় গৃহীর নিমন্ত্রণ-বিভ্ৰাট ধরা পড়িল না, গৃহিণীর ইহাই দক্ষতা । কবি বলিয়াছেন– “সা ভার্য যা গৃহে দক্ষা ।” বন্ধুসংখ্যা অল্প হইলেও কবির গৃহে বন্ধুসমাগম অল্প হইত না । এইরূপ ভ্রান্তিমূলক নিমন্ত্রণ-বিভ্রাট কবির এই একবারই মাত্র নহে ; কবির ভাব বুঝিয়াই মৃণালিনী দেবী নানা মিষ্টান্ন প্রস্তুত করিয়া রাখিতেন, বন্ধুসমাগমে আর খাদ্য-বিভ্ৰাট ঘটিত না । দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন কবির প্রিয়পাত্র ছিলেন । তিনি প্রায়ই আসিতেন, সিড়িতে উঠিতে উঠিতে ‘কাকিমা, বড় ক্ষিদে পেয়েছে এই আবদার করিতে করিতে উপরে উঠিয়া আসিতেন। কাকিম অপ্রস্তুত থাকিতেন না, সস্নেহ বাক্যে পাত্র-ভরা খাদ্যে চিত্তরঞ্জনের চিত্তরঞ্জন করিতেন । এই স্নেহের দৃপ্ত বড়োই মধুর। কবি ও লোকেন্দ্রনাথ একই সময়ে বিলাতে মলি সাহেবের ছাত্র ছিলেন, সহপাঠিত্বে তাই উভয়ের সৌহৃদ্য বিশেষ উল্লেখযোগ্য । কবির সঙ্গে দেখা করিতে লোকেন্দ্রনাথ প্রায়ই আসিতেন, সুহৃৎ-পত্নী যথোচিত সমাদরে আতিথ্য করিয়া তাহাকে আপ্যায়িত করিতেন। উদার স্বভাব পক্ষপাতহীন । বলেন্দ্রনাথ ও নীতীন্দ্রনাথ কাকিমার কাছে থাকিতেই ভালোবাসিতেন ; তাহাদের প্রতি কাকিমারও পুত্রবৎ স্নেহ ছিল । অকৃত্রিম স্নেহ এমনই মনোমোহন । সর্বাঙ্গসুন্দর অভিনয়ে মৃণালিনী দেবীর নৈপুণ্য ছিল স্বাভাবিক। পূজার সময়ে (?) সত্যেন্দ্রনাথের পার্কস্ট্রীটের বাড়িতে রবীন্দ্রনাথের ‘রাজা ও রানী’ নাটক একবার অভিনীত হইয়াছিল । নাটকের নারায়ণীর ভূমিকা অভিনয় করিয়াছিলেন মৃণালিনী দেবী। পূর্বে তিনি কখনো অভিনয় করেন নাই। নারায়ণীর ভূমিকা নাকি সম্পূর্ণ স্বাভাবিকতার সহিত অভিনীত হইয়াছিল। מס\ צ