পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিয়ে হত সেইখানি ছিল বরসজ্জার উপকরণ। নিজেরই বাড়িতে পশ্চিমের বারান্দা ঘুরে রবীন্দ্রনাথ বিয়ে করতে এলেন অন্দরমহলে— স্ত্রী-আচারের সরঞ্জাম যেখানে সাজানো । বরসজ্জার শালখানি গায়ে জড়ানো রবীন্দ্রনাথ এসে দাড়ালেন পিড়ির উপর । নতুন কাকিমার আত্মীয়া র্যাকে সবাই ডাকতেন ‘বড় গাঙ্গুলির স্ত্রী’ বলে— রবীন্দ্রনাথকে বরণ করলেন তিনি। র্তার পরনে ছিল একখানি কালে রঙের বেনারসী জরির ডুরে । বিয়ের সময় কাকিম ছিলেন খুব রোগা । গ্রামের বালিকা, শহুরে হাবভাব কিছুই জানতেন না। কী মানুষের সঙ্গে তার বিয়ে হচ্ছে...কত বড় আশ্চর্ষ মানুষ, কাকে তিনি পেলেন, এর কোনো ধারণাই তার ছিল না । কনে এনে সাত পাক ঘুরানো হল— শেষে বরকনে দালানে চললেন সম্প্রদানস্থলে । বাড়ির অবিবাহিত বড়ো মেয়েগুলি সঙ্গে সঙ্গে চলল । আমিও জুটে গেলুম তাদের সঙ্গে । দালানের এক ধারে বসবার জায়গা ছিল আমাদের । দেখলুম সেখানে বসে স্বচক্ষে কাকিমার সম্প্রদান । সম্প্রদানের পর বরকনে এসে বাসরে বসলেন । রবীন্দ্রনাথের বউ এলে তার থাকবার জন্যে একটি ঘর নিদিষ্ট করা ছিল আগে থেকেই। বাসর বসলো সেই ঘরেই। বাসরে বসেই রবীন্দ্রনাথ দুষ্টুমি আরম্ভ করলেন। ভাড়-কুলো খেলা আরম্ভ হল, ভঁাড়ের চালগুলি ঢালা-ভরাই হল ভাড়খেলা। রবীন্দ্রনাথ ভাড় খেলার বদলে ভাড়গুলো উপুড় করে দিতে লাগলেন ধরে ধরে । তার ছোটো কাকিমা ত্রিপুরাসুন্দরী বলে উঠলেন, ওকি করিস রবি ? এই বুঝি তোর ভাড়খেলা ? ভাড়গুলো সব উণ্টেপাপ্টে দিচ্ছিস কেন ? রবীন্দ্রনাথের নিজের বাড়ি— নিজেই বর । তাকে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয় নি। তাই তার লজ্জা সংকোচের কারণ ছিল না। রবীন্দ্রনাথ বললেন, জানো না কাকিম।– সব যে উলট পালট হয়ে যাচ্ছে— কাজেই আমি ভাড়গুলো উলটে দিচ্ছি । >Wうbr