পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলায় কবি হঠাৎ বলে ফেললেন, “ঘরের মিষ্টি আর আমার দরকার নাই ।” বুঝলুম কাকমার হাতের মিষ্টির কথা মনে পড়ে তাকে ব্যথা দিল । অন্তরের ব্যথা খুব চেপে রাখেন কবি, কেমন করে সেদিন কথাটুকু মুখ ফসকে বেরিয়ে পড়েছিল । এইবার উপকরণ-বর্জনের পালা । সংসার-সরঞ্জাম সব-কিছু ফেলে চলে৷ যে-পথে কবি চলেন সেই পথে কবির সঙ্গে। সংসার-সঙ্গিনীর প্রতি এই ছিল তার আর-এক দিকের আর-এক ভাবের কথা । উপকরণের বোঝা বয়ে চলা সম্বন্ধে কবির মনে গভীর বিরাগ ছিল গোড়া থেকে । মনের চেতনা যাদের স্বক্ষ, উপকরণের ভার তারা সইতে পারেন না, দুঃখ পান তাই নিয়ে। ঘরছাড়া কবি ঘর ছেড়ে অন্যত্র বাস৷ বাধতে গেছেন কয়েকবার । যাত্রাকালে কবির মুখে এক কথা— উপকরণ আবর্জন ফেলে যাও, ওদের সঙ্গের সাথী কোরো না । ঘর-সংসারের প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য জিনিস— বঁট, কাটারি, কুরুনি, বারকোশ, কড়া, খুন্তি, হাতার বোঝাটি সঙ্গে যাচ্ছে দেখলেই কবি হুলুস্তুল বাধাতেন। চটেমটে বলতেন, “এ-সব জঞ্জাল জড়ো করা কেন ?" যেন দুখানি বস্ত্র হাতে নিয়ে বেরোতে পারলেই ভালো হয় কবির মতে । পথযাত্রায় গৃহস্থালি সরঞ্জাম দু-একটি বেশি সঙ্গে নেওয়ার দিকে মেয়েদের বেণক, পুরুষদের দৃষ্টিতে যেগুলি অনাবশ্বক ঠেকে। বোঝা বাড়াও কেন, পুরুষদের কথা । সময়কালে অভাবে ঠেকতে না হয়, মেয়েদের ভাব। প্রায় সকল বাড়ির মেয়েই যাত্রাকালে বাবুদের লুকিয়ে ব্যবহার্য দু-একটি জিনিস সঙ্গে নিয়ে থাকেন । কবির সংসারেও তার ব্যতিক্রম হত না, কবিপত্নীও কতকগুলি সরঞ্জাম সঙ্গে নিতেন লুকিয়ে । কৌতুক করে আমাদের কাছে আড়ালে বলতেন, “দেখ তো বাপু, এমন লোক নিয়ে কী করে ঘর করা যায়। ফেলে তো যাব সব, এদিকে গিয়েই কিন্তু অতিথি-সমাগমের ধুম পড়ে যাবে। অতিথির কারবার তো কবির কম নয়, তখন আনো মালপো, У \ b o S 8 (?