পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭. রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাবা ছিলেন তার নিজের ঘরে লেখাপড়া নিয়ে— মা ছিলেন তার ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসারের কাজে । সেইজন্য ছেলেবেলার কথা মনে করতে গেলে মায়ের কথাই বেশি মনে পড়ে । তার নিজের পাচটি ছেলেমেয়ে, কিন্তু তার সংসার ছিল সুবৃহৎ । বাড়ির ছোটোবউ হলে কি হয়, জোড়সাকো-বাড়ির তিনিই প্রকৃত গৃহিণী ছিলেন । কাকিমার কাছে সকলেই ছুটে আসত তাদের সুখদুঃখের কথা বলতে । সকলের প্রতি তার সমদুষ্টি ছিল, তিনি ছিলেন সকলের দুঃখে দুঃখী, সকলের সুখে সুখী । তাকে কোনোদিন কর্তৃত্ব করতে হয় নি, ভালোবাসা দিয়ে সকলের মন হরণ করেছিলেন । সেইজন্য ছোটোর। যেমন র্তাকে ভালোবাসত, বড়োরা তেমনি স্নেহ করতেন । সকলের মধ্যে বলুদাদা তার বিশেষ প্রিয়পাত্র ছিলেন। মা কখনো ইস্কুলে লেখাপড়া শেখেন নি— বাবার কাছেই যা শিক্ষা পেয়েছিলেন । অল্পবয়স থেকেই বলুদাদা সাহিত্যরসে মাতোয়ারা ছিলেন । তিনি সংস্কৃত বাংলা ইংরেজিতে যখন যে-কোনো বই পড়তেন, কাকিমণকে সেগুলি একবার পড়ে না শোনালে তার তৃপ্তি হত না । বলুদাদার কাছ থেকে শুনে শুনে মায়ের এই তিন ভাষার সাহিত্যের সঙ্গে বেশ ভালো করেই পরিচয় হয়েছিল । বলুদাদা আমাকে নিজের ছোটো ভাইয়ের মতো খুব স্নেহ করতেন । তিনি ছিলেন আমার বালকবয়সের আদর্শ পুরুষ। সব সময়েই তার পিছনে পিছনে ঘুরতুম। মা স্নান করিয়ে দিতেন, কিন্তু প্রসাধন করতে যে তুম বলুদাদার কাছে . আমাদের তেতলার ঘরের সামনে মস্তবড়ো ছাদ । তার মাঝখানটা আবার উচু প্ল্যাটফর্মের মতো— যেন বাড়ির খোলা বৈঠকখান । সমস্তদিন ধরে এখানে চলত ছেলেমেয়েদের হুটোপাটি— তাদের শিশুকণ্ঠের কলরব মুখরিত করে রাখত চার পাশ । রোদ পড়ে গেলেই চাকররা জাজিম তাকিয়া পেতে দিয়ে যেত মাঝখানে উচু জায়গাটায় । মেয়েদের তখন Σ Φ Φ.