পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এর পরের হপ্তায় চিঠি ফাঁক যায় তা হলে কিছু মনে কোরোনা। জাহাজে চিঠি লেখা বিশেষ শক্ত নয়— কিন্তু ডাঙ্গায় উঠে যখন ঘুরে বেড়াব, কখন কোথায় থাকুব তার ঠিকানা নেই— তখন দুই একটা চিঠি বাদ যেতেও পারে। আমরা, ধরতে গেলে পর্শু থেকে য়ুরোপে পৌঁচেছি। মাঝে মাঝে দূর থেকে য়ুরোপের ডাঙ্গা দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের জাহাজটা এখন ডান দিকে গ্রীস্ আর বাঁ দিকে একটা দ্বীপের মাঝখান দিয়ে চলেছে। দ্বীপটা খুব কাছে দেখাচ্চে— কতকগুলো পাহাড়, তার মাঝে মাঝে বাড়ি, এক জায়গায় খুব একটা মস্ত সহর দূরবীন দিয়ে তার বাড়িগুলো বেশ স্পষ্ট দেখতে পেলুম— সমুদ্রের ঠিক ধারেই নীল পাহাড়ের কোলের মধ্যে শাদা সহরটি বেশ দেখাচ্চে। তোমার দেখতে ইচ্ছে করচেনা ছুট্‌কি? তোমাকেও একদিন এই পথ দিয়ে আসতে হবে তা জান? তা মনে করে তোমার খুসি হয় না? যা কখনো স্বপ্নেও মনে কর নি সেই সমস্ত দেখতে পাবে। দুদিন থেকে বেশ একটু ঠাণ্ডা পড়ে আস্‌চে— খুব বেশি নয়— কিন্তু যখন ডেকে বসে থাকি, এবং জোরে বাতাস দেয় তখন একটু শীত-শীত করে। অল্পস্বল্প গরম কাপড় পরতে আরম্ভ করেছি। আজকাল রাত্তিরে “ডেকে” শোওয়াটাও ছেড়ে দিতে হয়েচে। জাহাজের ছাতে শুয়ে লোকেনের দাঁতের গোড়া ফুলে ভারি অস্থির করে তুলেছিল। আমরা যে সময়ে এসেছি নিতান্ত অল্প শীত পাব— দার্জিলিঙ্গে যেরকম শীত ছিল তার চেয়ে ঢের কম। ছাড়বার সময়-সময় একটু শীত হবে হয়ত। আমি অনেকগুলো