পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রতি মাসে নিয়মিত পনেরো সের করে ঘি পাওয়া তোমার এমনি স্বাভাবিক মনে হয়ে গেছে যেন বিয়ের পূর্ব্বে থেকে তোমার সঙ্গে আমার এই রকম কথা নির্দ্দিষ্ট ছিল। তোমার ভোলার মা আজকাল যখন শয্যাগত তখন এ ঘি বোধ হয় অনেক লোকের উপকারে লাগ্‌চে। ভালই ত। একটা সুবিধা, ভাল ঘি চুরি করে খেয়ে চাকরগুলোর অসুখ করবে না। আমার আম প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। এবারে মনে হল যেন দু জাতের আম ছিল, একরকমের আম খুব ভাল ছিল— অন্যটাও মন্দ নয় কিন্তু তেমন ভাল না। দুটো একটা পচেও গেছে। যাহোক ঠিক একটি হপ্তা ত চলে গেল। আমার আহার দেখে এখানকার লোকে খুব আশ্চর্য হয়ে গেছে। আমি ভাত খাইনে শুনে এরা মনে করে যেন আমি অনাহারে তপস্যা করচি। আটার রুটি যে ভাতের চতুর্গুণ খাদ্য তা এদের কিছুতেই ধারণা হয় না। যে ভদ্রলোক আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে সেই একবার করে আমার আহারের কথা তুলে আশ্চর্য্য প্রকাশ করে যায়। সাহাজাদপুরময় কথাটা রাষ্ট্র হয়ে গেছে। ভাত ছেড়ে দিয়েছি বলে সবাই আমাকে ভারি ধার্ম্মিক মনে করে— আমার কুষ্টিতে লেখা আছে কি না যে বিনা চেষ্টায় আমার যশ এবং আর দুই একটা জিনিষ হবে।

রবি

১৩