পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড ১৯৪২)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 চিঠিপত্র না জাহাজ ছাড়ব অার স্নান করব না । ইউরোপে পৌছতে এখনো হস্তাখানেক আছে– একবার সেইখানে পৌছে ডাঙ্গায় পা দিলে বাচি । এই দিন রাত্রি সমুদ্র আর ভাল লাগে না । আজকাল যদিও সমুদ্রট বেশ ঠাণ্ড হয়েছে, জাহাজ তেমন ফুলচে না, শরীরেও কোন অসুখ,নেই – সমস্ত দিন জাহাজের ছাতের উপরে একটা মস্ত কেদারার উপরে পড়ে, হয় লোকেনের সঙ্গে গল্প করি, নয় ভাবি, নয় বই পড়ি। রাত্তিরেও ছাতের উপরে বিছানা করে শুই, পারৎপক্ষে ঘরের ভিতরে ঢুকিনে । ঘরের মধ্যে গেলেই গা কেমন করে ওঠে। কাল রাত্তিরে আবার হঠাৎ খুব বৃষ্টি এল— যেখানে বৃষ্টির ছাট নেই সেইখানে বিছানাটা টেনে নিয়ে যেতে হল । সেই অবধি এখন পর্য্যন্ত ক্রমাগতই বৃষ্টি চলচে । কাল বেড়ে রোদর ছিল । আমাদের জাহাজে দুটো তিনটে ছোট ছোট মেয়ে আছে— তাদের মা মরে গেছে, বাপের সঙ্গে বিলেত যাচ্চে । বেচারাদের দেখে আমার বড় মায়া করে । তাদের বাপটা সর্বদা তাদের কাছে কাছে নিয়ে বেড়াচ্চে— ভাল করে কাপড় চোপড় পরাতে পারেন, জানে না কি রকম করে কি করতে হয় । তারা বৃষ্টিতে বেড়াচ্চে, বাপ এসে বারণ করলে, তারা বল্লে আমাদের বৃষ্টিতে বেড়াতে বেশ লাগে— বাপট একটু হাসে, বেশ আমোদে খেলা করচে দেখে বারণ করতে বোধ হয়] মন সরে না । তাদের দেখে আমার নিজের বাচ্ছাদের মনে পড়ে । কাল রাত্তিরে বেলিটাকে স্বপ্নে দেখেছিলুম— সে যেন ষ্টীমারে এসেচে— তাকে এমনি চমৎকার