পাতা:চিঠিপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড ১৯৯৩)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্র-পরিচয় তখন অল্প বয়স ছিল । সামনের জীবন ভোর বেলাকার মেঘের মত ; অস্পষ্ট কিন্তু নানা রঙে রঙীন । তখন মন রচনার আনন্দে পূর্ণ ; আত্ম-প্রকাশের স্রোত নানা বঁাকে বঁকে আপনাতে আপনি বিস্মিত হয়ে চলেছিল ; তীরের বাধ কোথা ও ভাঙচে কোথাও গড়চে ; ধারা কোথায় গিয়ে মিশবে সেই সমাপ্তির চেহারা দূর থেকেও চোখে পড়েনি। নিজের ভাগ্যের সীমারেখা তখনো অনেকটা অনির্দিষ্ট আকারে ছিল বলেই নিত্য নূতন উদ্দীপনায় মন নিজের শক্তির নব নব পরীক্ষায় সৰ্ব্বদা উৎসাহিত থাকত। তখনো নিজের পথ পাক৷ করে বাধা হয়নি ; সেইজন্তে চলা আর পথ বাধা এই দুই উদ্যোগের সব্যসাচিতায় জীবন ছিল সদাই চঞ্চল । এমন সময়ে জগদীশের সঙ্গে আমার প্রথম মিলন । তিনিও তখন চড়ার উপর ওঠেন নি। পূৰ্ব্ব উদয়াচলের ছায়ার দিক্‌টা থেকেই ঢালু চড়াই পথে যাত্রা করে চলেছেন, কীৰ্ত্তি-সুৰ্য্য আপন সহস্র কিরণ দিয়ে তার সফলতাকে দীপ্যমান করে তোলে নি । তখনো অনেক বাধা, অনেক সংশয় । কিন্তু নিজের শক্তিস্ফুরণের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের যে আনন্দ সে যেন যৌবনের প্রথম প্রেমের আনন্দের মতই আগুনে ভরা, বিঘ্নের পীড়নে দুঃখের তাপে সেই আনন্দকে আরো নিবিড় করে তোলে। প্রবল সুখদু:খের দেবাম্বরে মিলে অমৃতের জন্ত যখন জগদীশের তরুণ শক্তিকে মন্থন করছিল সেই সময় আমি তার খুব কাছে এসেছি । বন্ধুত্বের পক্ষে এমন শুভ সময় আর হয় না। তার পরে যখন মধ্যাহ্নকাল আসে তখন বিপুল সংসার মানুষকে দাবী করে বসে। তখন কা’র কাছে কি আশা করা যেতে পারে তা’র মূল্যতালিকা পাকা অক্ষরে > R>