পাতা:চিঠিপত্র (সপ্তম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্যাপারটা খুব প্রচণ্ড হতে পারে কিন্তু দেশের অবস্থার সঙ্গে উদ্দেশ্যের সামঞ্জস্য সাধন সে উপায়ে সিদ্ধ হয় না। “দেশে আগুন লেগেচে অতএব ইত্যাদি” এ কথা কিছুকাল থেকে শুনচি– এ আগুন বহু বহু শতাব্দী থেকেই লেগেচে– কিন্তু “আড়ি, আড়ি, আড়ি, আড়ি” বলে চীৎকার করবার জন্যে ছেলেরা লেখাপড়া এবং বুড়োর কাজকৰ্ম্ম ছেড়ে দিলেই এ আগুন নিববে এ কথা বিশ্বাস করি নে। চরকা চালিয়ে খদর পরে’ এই আগুন নিববে এটা এতবড় একটা ছেলেভোলানো কথা যে, এ কথায় দেশমৃদ্ধ লোক ভুলেচে দেখে হতবুদ্ধি ও হতাশ হতে হয়। সন্ন্যাসী বলচে তামাকে সোনা করবার একটা সহজ প্রক্রিয়া আমি জানি, আমি বলচি সোনা যথানিয়মে উপার্জন করতে হবে অন্য কোন প্রক্রিয়া নেই– তখন তুমি যদি আমার উপর রাগ কর তাতে এই প্রমাণ হয় যে, উপার্জন করবার মত উদ্যম তোমার নেই অথচ সোনা পাবার লোভ তোমার পুরো মাত্রায়—এমন মানুষকে বিধাতা পুরস্কার দেন না। চরকা চালিয়ে কোনো ফল হয় না একথা কেউ বলে না,তার যেটুকু ফল তাই হয় তার বেশি হয় না। কুইনিন খেলে ম্যালেরিয়া সারে, ম্যালেরিয়া সারলে দেশের পরম উপকার ঘটে, কিন্তু কুইনিন খেলে স্বরাজ হয় এ কথা কুইনীন বিক্রির মহাজনও বলে না । মেয়েদের শিক্ষাসম্বন্ধে তোমার সঙ্গে অবসরমত কোন এক সময়ে আলোচনা করব । ইতি ১৬ ফাল্গুন ১৩২৮ শুভাকাজক্ষী শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর