পাতা:চিঠিপত্র (সপ্তম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিধাতা— অর্থাৎ আমাদের জীবনের প্রত্যেক সুখ দুঃখ তাহারই বিধানে ঘটতেছে। যখন একথা নিশ্চয় যে আমার বন্ধুর বিধান ছাড়া জগতে আর কোনো বিধান নাই তখন জীবনের প্রতি মুহুর্তেই আমি ধন্য— সুখ দুঃখ আমার সকলি শিরোধাৰ্য্য— সকল কৰ্ম্মে সকল স্থানেই তিনি আমাকে আমার সার্থকতার দিকেই লইয়া যাইতেছেন ইহাতে কোনো সন্দেহই নাই। আমিই কি কেবল র্তাহাকে চাই তিনি কি আমাকে চান না ? যদি না চাহিবেন তবে আমার মত ক্ষুদ্রটুকুর জন্য জগৎ জুড়িয়া এত আয়োজন করিয়া রাখিয়াছেন কেন ? শুধু কেবল আমিই যদি তাহাকে চাহিতাম তবে কোনকালে তাহাকে পাইতাম না— কিন্তু তিনি যখন আমাকে চান তখন আর ভাবনা কিসের ? তাহার কাল অনন্ত র্তাহার পথ বিচিত্র এবং এই ক্ষুদ্র জীবনেই আমাদের শেষ নহে। অতএব প্রত্যহই তাহার প্রতি নির্ভর করিয়া থাক— ইহা নিশ্চয় মনে রাখ তিনি তোমাকে এক মুহূৰ্ত্ত ছাড়েন নাই । আমি গুরুর ন্যায় উপদেশ দিবার অধিকারী নহি— আমি হিতৈষীর ন্যায় তোমাকে পরামর্শ দিতেছি যে জীবনে প্রত্যহ একটা কোনো মঙ্গল কৰ্ম্ম করিয়ো যাহা নিতান্তই তাহারই উদেশে করা হইবে । যাহার জন্য যশ চাহিবেন ; যাহার প্রতিদান পাইবেন, যাহা সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে গোপনে সম্পন্ন করবে। তখন মনে মনে এই বলিয়ে, “ভগবান এই কাজটি সম্পূর্ণ তোমাকেই দিলাম— ইহা তুমিই জানিলে আর আমিই জানিলাম।” যদিও সংসারের সকল কাজই তাহারই কাজ, কারণ এ সংসার তাহারই সংসার— ૨