পাতা:চিঠিপত্র (সপ্তম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলিয়া স্বীকার করিতে থাকিলেই তাহার জাল ছিন্ন করা কঠিন হইয়া উঠে— সমস্ত দুঃখ দৈন্য অভাবের চেয়ে যে আমি বড় ইহা বারম্বার মনকে বুঝাইয়ো । আমি যে প্রতি মুহুর্তে বাচিয়া আছি ইহার জন্য ঈশ্বরের অনন্ত শক্তি ব্যয় হইতেছে, সেই শক্তির কণামাত্র হ্রাস হইলেই আমি তৎক্ষণাৎ বিলুপ্ত হইয়া যাইতাম ; এই যে এতবড় শক্তির দ্বারা বিধৃত আমি, এই যে এত বড় প্রেমের দ্বারা পরিবেষ্টিত আমি— আমার খেদ কি লইয়া ? কে আমাকে কি বলিল— কে আমাকে কি বুঝিল ইহাই কি জগতে সকলের চেয়ে বড় ? আমার যে এক মুহূৰ্ত্তের দৃষ্টিশক্তি একটি প্রকাণ্ড ব্যাপার —আমার যে একবার মাত্র নিশ্বাস লইবার ক্ষমতা একটি আশ্চৰ্য্য ঘটনা— আমার মত এই পরমাশ্চৰ্য্য সত্তাকে কোনো দুঃখই মলিন করিতে এবং কোনো পীড়নই ক্ষুদ্র করিতে পারে না । মন যখনই অপ্রসন্ন হইতে চাহিবে তখনি তাহাকে তোমার সমস্ত শক্তিতে উদ্ধের দিকে টানিয়া তুলিবে, বলিবে— সুখং বা যদিবা দুঃখং প্রিয়ং বা যদিবাপ্রিয়ম্, প্রাপ্তং প্রাপ্তমুপাসীত হৃদয়েনাপরাজিতা— সুখই হউক দুঃখই হউক, প্রিয়ই হউক অপ্রিয়ই হউক যাহাই প্রাপ্ত হইবে তাহাকেই অপরাজিত চিত্তে উপাসনা করিবে । ইতি ২৬শে বৈশাখ ১৩১৩ । আশীৰ্ব্বাদক শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর