পাতা:চিত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮
চিত্রা।

মধ্যাহ্নে মাঠের মাঝে একাকী বিষন্ন তরুচ্ছায়ে
দূর-বনগন্ধবহ মন্দগতি ক্লান্ত তপ্তবায়ে
সারাদিন বাজাইলি বাঁশি!—ওরে তুই ওঠ আজি!
আগুন লেগেছে কোথা? কার শঙ্খ উঠিয়াছে বাজি
জাগাতে জগৎ-জনে? কোথা হতে ধ্বনিছে ক্রন্দনে
শূন্যতল? কোন্ অন্ধকারা মাঝে জর্জ্জর বন্ধনে
অনাথিনী মাগিছে সহায়? স্ফীতকায় অপমান
অক্ষমের বক্ষ হতে রক্ত শুষি করিতেছে পান
লক্ষমুখ দিয়া! বেদনারে করিতেছে পরিহাস
স্বার্থোদ্ধত অবিচার! সঙ্কুচিত ভীত ক্রীতদাস
লুকাইছে ছদ্মবেশে! ওই যে দাঁড়ায়ে নতশির
মূক সবে-ম্লানমুখে লেখা শুধু শত শতাব্দীর
বেদনার করুণ কাহিনী; স্কন্ধে যত চাপে ভার-
বহি চলে মন্দগতি, যতক্ষণ থাকে প্রাণ তার,—
তার পরে সন্তানেরে দিয়ে যায় বংশ বংশ ধরি’;
নাহি ভর্তসে অদৃষ্টেরে, নাহি নিন্দে দেবতারে স্মরি,
মানবেরে নাহি দেয় দোষ, নাহি জানে অভিমান,
শুধু দুটি অন্ন খুঁটি কোন মতে কষ্টক্লিষ্ট প্রাণ
রেখে দেয় বাঁচাইয়া! সে অন্ন যখন, কেহ কাড়ে,
সে প্রাণে আঘাত দেয় গর্ব্বাদ্ধ নিষ্ঠুর অত্যাচারে,