পাতা:চিত্রা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৭৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৬
চিত্রা।

সপ্তপুরুষ যেথায় মানুষ সে মাটি সোণার বাড়া,
দৈন্যের দায়ে বেচিব সে মায়ে এমনি লক্ষ্মীছাড়া”!
আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল রহিল মৌনভাবে,
কহিলেন শেষে ক্রুর হাসি হেসে, “আচ্ছা সে দেখা যাবে”!


পরে মাস দেড়ে ভিটেমাটি ছেড়ে বাহির হইনু পথে-
করিল ডিক্রি, সকলি বিক্রি মিথ্যা দেনার খতে।
এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি!
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি!
মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান রাখিবে না মোহগর্ত্তে,
তাই লিখি দিল বিশ্ব-নিখিল দু বিঘার পরিবর্ত্তে!
সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে হইয়া সাধুর শিষ্য,
কত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃশ্য।
ভূধরে সাগরে বিজনে নগরে যখন যেখানে ভ্রমি,
তবু নিশিদিনে ভূলিতে পারিনে সেই বিঘা দুই জমি!
হাটে মাঠে বাটে এই মত কাটে বছর পনেরো ষোলো,
একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে বড়ই বাসনা হোলো।


নমোনমো নমঃ, সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!
গঙ্গার তীর স্নিগ্ধ সমীর জীবন জুড়ালে তুমি!