পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
দারোগার দপ্তর, ১৬৮ সংখ্যা।

করিয়া বলিতে পারি না যে, আমার গড়া শ্যামা-প্রতিমা ঠিক জহরের মত হইবে। বলিতে কি, জহরের এই ছয়টা পুতুল যত সুন্দর হইয়াছে, আগেকারগুলি তত নহে।

 আ। ভাল, আর এক টাকা অধিক দিব—ছয় টাকা পাইবে।

 নফর আর কোন কথা কহিল না। তখনই সেই তক্তাগুলির কাছে গেল ও একখানি শিব ও একখানি কালী প্রতিমা তুলিয়া লইয়া আমার নিকট ফিরিয়া আসিল।

 আমি দুই প্রতিমা দুই হস্তে গ্রহণ করিয়া উত্তমরূপে নিরীক্ষণ করিলাম। দেখিলাম, অতি সুন্দর। ইহা সাধকের কল্পনার ধন, বালকের মনভুলান খেলনা, রমণীর গৃহসজ্জার প্রধান উপকরণ, ধার্ম্মিকের প্রাণের সামগ্রী। গঠন অতি চমৎকার। বর্ণের মাধুরী ও লাবণ্য তদ্রূপ হৃদয়গ্রাহী।

 দেখা হইলে প্রতিমা দুইখানি নফরের হাতে ফিরিয়া দিলাম। বলিলাম, “শ্যামার পদতলে মহাদেবের মস্তকে দুইটা সাপ কেন? তোমার সমস্ত কালীপ্রতিমাতেই কি এইরূপ আছে?”

 নফর অতি বিনীতভাবে উত্তর করিল, “আজ্ঞে না। যে পাঁচজন এই পাঁচ জোড় পুতুলের ফরমাইস দিয়াছেন, তাঁহারা পরস্পর বন্ধু। তাঁহাদের হুকুম মত মহাদেবের মাথায় দুইটা সাপ দেওয়া হইয়াছে। আর যখন ছয়টী একসঙ্গে গড়া হইয়া ছিল, তখন এটাও অন্য পাঁচটার মত হইয়াছে। আমার আগেকার পুতুলগুলির দুইটা করিয়া সাপ দেওয়া হয়, নাই। আমার বোধ হয়, দুইটা সাপ দেওয়ায় এগুলি দেখিতে আরও সুন্দর হইয়াছে।”