পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৩৩

 আ। তোমার বাপকে যে সেদিন মারিয়া প্রায় খুন করিয়া ফেলিয়াছ। তাহার গায়ের দাগ এখনও তেমনই রহিয়াছে।

 জহরলাল হাসিয়া উঠিল। সে হাসির যেন শেষ নাই; ক্রমাগত এক কোয়াটার ধরিয়া জহরলাল হাসিল। পরে বলিল, “এও কি কখন হয়? ছেলে হইয়া বাপকে মারিবে? না মহাশয়? আপনি আমাকে উপহাস করিবেন না। আপনারা দেবতা—জ্ঞানী পুরুষ হইয়া আমার সঙ্গে তামাসা করিবেন না|”

 আমি আর সেকথা তুলিলাম না। জহরের মন তখন স্থির আছে দেখিয়া, আমি নফরের দোকানের কথা পাড়িবার মতলর করিলাম। জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি নফরের নিকট হইতে কত টাকা করিয়া বেতন পাইতে?”

 জহর আমার কথায় রাগিয়া গেল। বলিল, “আমি কাহারও মাহিনার চাকর নহি। আমি মাহিনা লইয়া কাজ করিতাম না।”

 আমি বলিলাম, “আমি সে রকম মাহিনার কথা বলি নাই। তুমি মাসে কত টাকা উপায় করিতে এই আমার জিজ্ঞাস্য।”

 জহর উত্তর করিল, “নফর বাবু যদি আমায় যথার্থ উচিতমত মুল্য দিতেন, তাহা হইলে আমার আয় যথেষ্ট হইত। কিন্তু তিনিই আমার ঐ কার্য্যের গুরু, আমি তাঁহারই নিকট হইতে শিক্ষালাভ করিয়াছি। সুতরাং প্রায় অর্দ্ধ মূল্যেই আমায় কার্য্য করিতে হয়। অন্য কোথাও যাইলে আমি দ্বিগুণ উপায় করিতে পারি, কিন্ত বোধ হয়, আমি আর কার্য্য করিতে পারিব না।”

 আ। কত টাকা উপায় কর বলিলে না?

 জ। পঁচিশ ত্রিশ টাকার কম নহে।

 আ। নফরের দোকানে সেদিন কি হইয়াছিল?