পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৫৫

বনীয়াদী বড়লোকের বৈঠকখানা যেমন সুন্দর করিয়া সাজান, তাহা বোধ হয়, সকলেরই জানা আছে। ঘরে যত দামী ও সৌখিন জিনিষ ছিল, প্রায় সকলগুলিই ভগ্নাবস্থায় পড়িয়া রহিয়াছে। আর সেই ঘরের একপাশে তিনজন বলিষ্ঠ দরোয়ান জহরলালকে বলপূর্ব্বক ধরিয়া রহিয়াছে।

 সহসা জহরলালের দৃষ্টি আমার দিকে পতিত হইল, সে যেন চমকিত হইল। তাহার মুখ পাংশুবর্ণ ধারণ করিল এবং পরক্ষণেই এক বিকট চীৎকার করিয়া অজ্ঞান হইয়া মেঝের উপর পড়িয়া গেল। দারোয়ান তিনজন হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচিল।

 হরিশ বাবু এই ব্যাপার দেখিয়া, একজন চাকরকে লোহার শিকল আনিতে আদেশ করিলেন। শিকল আনীত হইলে জহরলালকে উত্তমরূপে বন্ধন করা হইল।

 হরিশ বাবু তখন আমার দিকে চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন কি করা যায় বলুন দেখি?—থানায় খবর দিব কি?”

 আমি বলিলাম, “এখনই থানায় লোক পাঠাইয়া দিন। বড় ভয়ানক ব্যাপার! লোকটা সামান্য নয়।”

 হরিশ বাবু আমার কথা বোধ হয় ভাল বুঝিতে পারিলেন না। তিনি কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন। পরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তবে কি এ লোক আপনার চেনা?”

 আমি বলিলাম, “এখন আমায় কোন কথা জিজ্ঞাসা করিবেন না। কিছু পরেই সমস্ত ব্যাপার জানিতে পারিবেন। আগে আমি আপনাকে দুই একটা কথা জিজ্ঞাসা করিতে ইচ্ছা করি।”

 হ। কি বলুন?

 আ। এই দরজার পার্শ্বে একটা ভাঙ্গা প্রতিমূর্ত্তি পড়িয়া