পাতা:ছড়ার ছবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এই বলে সে বাড়ি ছেড়ে পাঁকের পথে ঘুরে
চিহ্ন-দেওয়া নিজের গােরু অনেক দূরে দূরে
গােটা পাঁচেক খোঁজ পেয়ে তার আনলে তাদের কেড়ে,
মাথা ভাঙবে ভয় দেখাতেই সবাই দিল ছেড়ে।
ব্যাবসাটা ফের শুরু করল নেহাত গরিব চালে,
আশা রইল উঠবে জেগে আবার কোনােকালে।


এ দিকেতে প্রকাণ্ড এক দেনার অজগরে
একে একে গ্রাস করছে যা আছে তার ঘরে।
একটু যদি এগােয় আবার পিছন দিকে ঠেলে,
দেনা পাওনা দিনরাত্রি জোয়ার-ভাঁটা খেলে।
মাল তদন্ত করতে এল দুনিয়াচাঁদ বেনে,
দশ বছরের ছেলেটাকে সঙ্গে করে এনে।
ছেলেটা ওর জেদ ধরেছে— ঐ সুধিয়া গাই
পুষবে ঘরে আপন ক’রে ঐটে নেহাত চাই।
সামরু বলে, ‘তােমার ঘরে কী ধন আছে কত
আমাদের এই সুধিয়াকে কিনে নেবার মতো?
ও যে আমার মানিক, আমার সাত রাজার ঐ ধন,
আর যা আমার যায় সবই যাক, দুঃখিত নয় মন।
মৃত্যুপারের থেকে ও যে ফিরেছে মাের কাছে,
এমন বন্ধু তিন ভুবনে আর কি আমার আছে!’


বাপের কানে কী বললে সেইচাঁদের দুনি ছেলে,
জেদ বেড়ে তার গেল বুঝি যেমনি বাধা পেলে।
শেঠজি বলে মাথা নেড়ে, ‘দুই-চারি মাস যেতেই
ঐ সুধিয়ার গতি হবে আমার গােয়ালেতেই।’

৫৫