পাতা:ছড়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
গ্রন্থপরিচয়

২৮১৭১১ সংখ্যক ছাড়া সাময়িক পত্রে পাওয়া যায় না। গ্রন্থের প্রথম ছড়াটির সংক্ষিপ্ত পূর্বপাঠ শনিবারের চিঠিতে তথা বর্তমান গ্রন্থে লেখাঙ্কন চিত্রে দেখা যাইবে। পূর্বোক্ত পত্রে সপ্তম ছড়া ছাপা হয় কবি-কর্তৃক'২১১১৩৯ তারিখে আঁকা এক কৌতুকচিত্র-সহ, মন্তব্যছলে লেখা হয় সাহিত্যে অবচেতন চিত্তের সৃষ্টি এবং কবিতার ভূমিকায় থাকে: অবচেতন মনের কাব্যরচনা অত্যাস করছি। সচেতন বুদ্ধির পক্ষে বচনের, অসংলগ্নতা দুঃসাধ্য। ভাবী যুগের সাহিত্যের প্রতি লক্ষ করে হাত পকাতে প্রবৃত্ত হলেম। তারই এই নমুনা। কেউ কিছুই বুঝতে যদি না পারেন, তা হলেই আশাজনক হবে।

রবীন্দ্রনাথের এক পাণ্ডুলিপি হইতে আর-এক পাণ্ডুলিপিতে, অন্যের হাতের এক নকল হইতে আর-এক নকলে (প্রায়শই কবির নিজের হাতের বিবিধ ‘সংশোধনে ও কম-বেশি সংযোজনে সমৃদ্ধ এবং তাৎপর্যবান্). ছড়ার অধিকাংশ কবিতায় পাঠের পরিবর্তন বা বিবর্তন অল্প হয় নাই-ইহা লক্ষ করিবার বিষয়।


ছড়াতে অর্থ যাই থাক অথব! প্রচ্ছন্ন থাক, ‘ধ্বনিতে থাকবে সুর। ছেলেমেয়েরা অর্থ নিয়ে নালিশ করবে না, খেলা করবে ধ্বনি নিয়ে। অর্থলোভী জাত নয়’ এ-সবই বলিয়াছেন রবীন্দ্রনাথ ছড়ার ছবি'র ভূমিকায় (১৩৪৪)। সেইসঙ্গে বলিয়াছেন ছড়ায় প্রাকৃত ভাষার ঘরাও ছন্দ। এ ছন্দ মেয়েদের মেয়েলি আলাপ, ছেলেদের ছেলেমি প্রলাপের বাহনগিরি করে এসেছে।••• ছড়ার ছন্দকে চেহারা দিয়েছে প্রাকৃত বাংলার শব্দের চেহারা। আলোর স্বরূপ সম্বন্ধে আধুনিক বিজ্ঞানে দুটো উল্টো কথা বলে। এক হচ্ছেআলোর রূপ ঢেউয়ের রূপ, আর হচ্ছে- সেটা কণাবৃষ্টির রূপ। বাংলা সাধুভাষার রূপ ঢেউয়ের, বাংলা প্রাকৃত ভাষার রূপ কণাবৃষ্টির। বহুপূর্বে 'ছেলেভুলানো ছড়া’য় (১৩০১) ছড়ার চিত্রময়তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করিয়াছেন যেমন, রবীন্দ্রনাথ দেখাইয়াছেন উহার অসংলগ্নতা ও

৬০