পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছন্দের মাত্রা
১০৯

পঢ়ম দহ দিজ্জিআ
পুণবি তহ কিজ্জিআ
পুণবি দহ সত্ত তহ বিরই জাআ।
এম পরি বিবিহু দল
মত্ত সততীস পল
এহু কহ ঝুল্লণা ণাঅরাআ।[১]

ভাষ্যকারের ব্যাখ্যা এই, “প্রথমং দশমাত্রা দীয়ন্তে। অর্থাৎ তত্র বিরতিঃ ক্রিয়তে। পুনরপি তথা কর্তব্যা। পুনরপি সপ্তদশমাত্রাসু বিরতির্জাতা চ। অনয়ৈব রীত্যা দলদ্বয়েপি মাত্রাঃ সপ্তত্রিংশৎ পতন্তি।” এমনি করে দলগুলিকে[২] মিলিয়ে যে ছন্দের সাঁইত্রিশ মাত্রা “তামিমাং নাগরাজঃ পিঙ্গলো ঝুল্লণামিতি কথয়তি”। আমি যাকে ছন্দোবিশেষের রূপকল্প বা প্যাটার্‌ণ্[৩] বলছি ‘ঝুল্লণা’ ছন্দে সেইটে সাঁইত্রিশ মাত্রায় সম্পূর্ণ, তারপরে তার অনুরূপ পুনরাবৃত্তি। অমূল্যবাবু হয়তো এর কলাগুলির প্রতি লক্ষ্য রেখে একে পাঁচ বা দশমাত্রার ছন্দ বলবেন, কিন্তু পাঁচ বা দশমাত্রায় এর পদের সম্পূর্ণতা নয়।

 যার ভাগগুলি অসমান এমন ছন্দ দেখা যাক।

কুংতঅরু ধণুদ্ধরু
হঅবর গঅবরু
ছক্কলু বিবি পা—
ইক্ক দলে।[৪]

  1. প্রাকৃতপৈঙ্গলম্ ১।১৫৬। এ-ছন্দের সঙ্গে জয়দেবের ‘বদসি যদি কিঞ্চিদপি’ ইত্যাদি বিখ্যাত রচনাটির ছন্দোগত সাদৃশ্য লক্ষণীয়।
  2. ‘দল’ মানে ছন্দের বৃহত্তম বিভাগ বা ‘চরণ’। ঝুল্লণা ছন্দে দুই দল, প্রতিদলে সাঁইত্রিশ মাত্রা।
  3. ‘প্রাকৃতপৈঙ্গলম্’এর ভাষ্যকার এই রূপকল্প বা প্যাটার্‌ণ্ অর্থে ‘পরিপাটি’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। ঝুল্লণা ছন্দের প্রতিদলে সাঁইত্রিশ মাত্রা স্থাপনের পরিপাটি হচ্ছে ১০।১০।১০।৭।
  4. প্রাকৃতপৈঙ্গলম্ ১।১৭৯। প্রাকৃত-ছন্দশাস্ত্রমতে এ-ছন্দের নাম ‘দণ্ডকল’।