অথবা প্রত্যেক চার মাত্রায় ঝোঁক দিয়ে পয়ার পড়া যেতে পারে। যমন—
সুনিবিড় | শ্যামলতা | উঠিয়াছে | জেগে • •
ধরণীর | বনতলে | গগনের | মেঘে • •।
ছন্দের দুটি জিনিস দেখবার আছে— এক হচ্ছে তার সমগ্র অবয়ব, আর তার সংঘটন। পয়ারের অবয়বের মাত্রাসমষ্টি ষোল সংখ্যায়। এই ষোল মাত্রা সংঘটিত হয়েছে দুই মাত্রার অংশযোজনায়। ধ্বনিরূপসৃষ্টিতে ‘দুই’ সংখ্যার একটি বিশেষ প্রভাব আছে, ‘তিন’ সংখ্যা থেকে তা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। দৃষ্টান্ত দেখাই।
শ্রাবণ-ধারে সঘনে
কাঁদিয়া মরে যামিনী,
ছোটে তিমির-গগনে
পথহারানো দামিনী।
এই ছন্দটির সমগ্র অবয়ব ষোল মাত্রায়। সেই ষোল মাত্রাটি সংঘটিত হচ্ছে তিন-দুই তিন মাত্রার যোগে, এইজন্যেই পয়ারের মতো এর চালচলন নয়। যে আট মাত্রা দুইয়ের অংশ নিয়ে সে চলে সোজা সোজা পা ফেলে, কিন্তু যে আট মাত্রা তিন-দুই-তিনের ভাগে সে চলছে হেলতে দুলতে মরালগমনে।
চেয়ে থাকে মুখপানে,
সে চাওয়া নীরব গানে
মনে এসে বাজে,
যেন ধীর ধ্রুবতারা
কহে কথা ভাবাহারা
জনহীন সাঁঝে।
যতিমাত্রাসমেত চব্বিশ মাত্রায় এই ত্রিপদীর অবয়ব। এই চব্বিশ মাত্রা দুই মাত্রাখণ্ডের সমষ্টি, এইজন্যেই একে পয়ারশ্রেণীতে গণ্য করব।