অসংগতি অধিকাংশ স্থলে ব্যঙ্গকাব্যেরই প্রয়োজন মেটাতে পারে। যথা—
বিলাতে পালাতে ছটফট করে নব্য গউড়ে
অরণ্যে যে-জন্যে গৃহগবিহগপ্রাণ দউড়ে।
স্বদেশে কাঁদে সে, গুরুজনবশে কিচ্ছু হয় না,
বিনা হ্যাট্টা কোট্টা ধুতি-পিরহনে মান রয় না।[১]
‘মানসী’ লেখবার সময় আমার মনে প্রথম সংকল্প এল যে, যুক্তধ্বনিকে দুই মাত্রার গৌরব দিয়ে ছন্দকে ধ্বনিবন্ধুর করব।[২] সকলেই জানেন বাংলা ছন্দে যুক্তবর্ণ তখন ঐকমাত্রিক শ্রেণীতে গণ্য ছিল। সেই জন্যেই ‘বদনমণ্ডলে ভাসিছে ব্রীড়া’ এমনতরো লাইনের সৃষ্টিতেও কবির সংকোচ ছিল না।[৩]
প্রথমত সেদিন যুক্তবর্ণকে পয়ারেও দিলেম দুই মাত্রার আসন।[৪] লিখলেম
নিম্নে যমুনা বহে স্বচ্ছশীতল,
ঊর্ধ্বে পাষাণতট শ্যাম শিলাতল।
অনতিকাল পরেই বোঝা গেল পয়ারের উপর এ-আইন চালাবার কোনোই প্রয়োজন নেই। বিনা বাধায় লেখা যেতে পারে
উন্মত্ত যমুনা বহে, আবর্তিত জল
দুর্গম শৈলের তটে উদ্দাম উচ্ছল।
যদি লেখা যায়
হিমালয় নামে গিরি নগ-অধিরাজ
তাহলে হিমালয়ের মতো অত বড়ো পদার্থেরও উপর মন চলে যায়