দেখা যায় পৌরুষের অভিমানে জাপানির প্রাণপণ নির্ভীকতা। চারুতা ও বীর্যের সম্মিলনে এই যে তার আত্মপ্রকাশ, এ তো ফৌজদারি দণ্ডবিধির সৃষ্টি নয়। অথচ জাপানির ব্যক্তিস্বরূপ বন্ধনের সৃষ্টি, তার পরিপূর্ণতা সীমার দ্বারাতেই। নিয়ত প্রকাশমান চলমান এই তার প্রকৃতিকে শক্তিদান রূপদান করে যে আন্তরিক বন্ধন, যে সজীব সীমা তাকেই বলি ছন্দ। আইনের শাসনে সমাজস্থিতি, অন্তরের ছন্দে আত্মপ্রকাশ।
বিংশতিকোটি মানবের বাস
এ ভারতভূমি যবনের দাস
রয়েছে পড়িয়া শৃঙ্খলে বাঁধা।
আর্যাবর্ত জয়ী মানব যাহারা
সেই বংশোদ্ভব জাতি কি ইহারা,
জন কত শুধু প্রহরী-পাহারা
দেখিয়া নয়নে লেগেছে ধাঁধা।[১]
দেখা যাচ্ছে ছন্দের বন্ধনে শব্দগুলোকে শৈথিল্য থেকে বাঁচিয়ে রেখেছে, এলিয়ে পড়ছে না, তারা একটা বিশেষ রূপ নিয়ে চলেছে। বাঁধন ভেঙে দেওয়া যাক।
ভারতভূমিতে বিংশতিকোটি মানব বাস করিয়া থাকে, তথাপি এই দেশ দাসত্বশৃঙ্খলে আবদ্ধ হইয়া আছে। যাহারা একদা আর্যাবর্ত জয় করিয়াছিল ইহারা কি সেই বংশ হইতে উদ্ভূত। কয়েকজনমাত্র প্রহরীর পরিক্রমণ দেখিয়াই ইহাদের চক্ষুতে কি দৃষ্টিবিভ্রম ঘটিয়াছে। কথাগুলোর কোনো লোকসান হয়নি, বরঞ্চ হিসাব করে দেখলে কয়েক পারসেন্ট্ মুনফাই দেখা যায়। কিন্তু কেবল ব্যাকরণের বাঁধনে
- ↑ হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়: কবিতাবলী, ভারতসংগীত। দ্রষ্টব্য ৯৭ পৃষ্ঠা। ‘বিংশতি’ শব্দে চার মাত্রা গণনীয়, এখানে তৎকাল-প্রচলিত অক্ষরগণনার রীতি লঙ্ঘিত হয়েছে; ভ্রষ্টব্য ৬৭ পৃষ্ঠা। তুলনীয় ‘বংশোদ্ভব’ শব্দ।