পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চিঠিপত্র
১৯৫

যদি লিখতে

সংগীতসুধা নন্দনেরি আলিম্পনে

তাহলে ছন্দের ত্রুটি হত না।

 যাক। তারপরে ‘ঐকান্তিকা’। ওটা প্রাকৃত ছন্দে লেখা। ছন্দের স্থিতিস্থাপকতা[১] যথেষ্ট। মাত্রার ওজনের একটু-আধটু নড়চড় হলে ক্ষতি হয় না। তবুও নেহাত ঢিলেমি করা চলে না। বাঁধামাত্রার নিয়মের চেয়ে কানের নিয়ম সূক্ষ্ম, বুঝিয়ে বলা বড়ো শক্ত কেন ভালো লাগল বা লাগল না। ‘ঐকান্তিকা’র ছন্দটা বন্ধুর হয়েছে সে-কথা বলতেই হবে। অনেক জায়গায় দূরান্বয়ের জন্যে এবং ছন্দের বিভাগে বাক্য বিভক্ত হয়ে গেছে বলে অর্থ বুঝতে কষ্ট পেয়েছি। তন্ন তন্ন আলোচনা করতে হলে বিস্তর বাক্য ও কাল ব্যয় করতে হয়। তাই আমার কান ও বুদ্ধি অনুসরণ করে তোমার কবিতাকে কিছু কিছু বদল করেছি। তুমি গ্রহণ করবে এ আশা করে নয়, আমার অভিমতটা অনুমান করতে পারবে এই আশা করেই।

 ১৩৩৬ কার্তিক ১

 তুমি এমন করে সব প্রশ্ন ফাঁদ যে দুচার কথায় সেরে দেওয়া অসম্ভব হয়, তোমার সম্বন্ধে আমার এই নালিশ।

 ১। আবার এরা ঘিরেছে মোর মন'— এই পংক্তির ছন্দোমাত্রার সঙ্গে ‘দাহ আবার বেড়ে ওঠে ক্রমে’র মাত্রার অসাম্য ঘটেছে এই তোমার মত। ‘ক্রমে’ শব্দটার ‘ক্র’র উপর যদি যথোচিত ঝোঁক দাও তাহলে

  1. দ্রষ্টব্য পৃ ১৯২ পাদটীকা ২। এ-প্রসঙ্গে সাধুছন্দের ‘স্থিতিস্থাপকতা’র আলোচনাও লক্ষিতব্য পৃ ১২০-২১।