পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৮
ছন্দ

এই ছন্দে যতির যে পঞ্চায়তী বিধান আছে তা রক্ষা হবে না। এখানে যতিভঙ্গ ছন্দোভঙ্গ একই কথা। প্রত্যেক পদক্ষেপের সমষ্টি নিয়ে নৃত্য, কিন্তু একটিমাত্র পদপাতে যদি চ্যুতি ঘটে তাহলে সে ত্রুটি পদবিক্ষেপের ত্রুটি, সুতরাং সমস্ত নৃত্যেরই ত্রুটি।

 ১৩৩৮ শ্রাবণ ৯

 ‘তোমারই’ কথাটাকে সাধুভাষার ছন্দেও আমরা ‘তোমারি’ বলে গণ্য করি।[১] এমন একদিন ছিল যখন করা হত না। আমিই প্রথমে এটা চালাই।‘এক্‌টি’ শব্দকে সাধুভাষায় তিনমাত্রার মর্যাদা যদি দেও তবে ওর হসন্ত হরণ করে অত্যাচারের দ্বারা সেটা সম্ভব হয়। যদি হসন্ত রাখ তবে দ্বৈমাত্রিক বলে ওকে ধরতেই হবে। যদি মাছের উপর কবিতা লেখার প্রয়োজন হয় তবে ‘কাৎলা’ মাছকে কা-ত-লা উচ্চারণের জোরে সাধুত্বে উত্তীর্ণ করা আর্যসমাজি শুদ্ধিতেও বাধবে। তুমি কি লিখতে চাও

পাতলা করিয়া কাটো কাতলা মাছেরে,
উৎসুক নাতনী যে চাহিয়া আছে রে।

আর আমি যদি লিখি

পাৎলা করি কাটো প্রিয়ে কাৎলা মাছটিরে
টাট্‌কা করি দাও ঢেলে সর্‌ষে আর জিরে,
ভেট্‌কি যদি জোটে তাহে মাখো লঙ্কাবাঁটা,
যত্ন করে রেছে ফেলো টুকরো যত কাঁটা।

  1. দ্রষ্টব্য পৃ ৫৮-৫৯।