পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০০
ছন্দ

 ছন্দ‌ নিয়ে যে-কথাটা তুলেছ সে সম্বন্ধে আমার বক্তব্যটা বলি। বাংলার উচ্চারণে হ্রস্বদীর্ঘ উচ্চারণভেদ নেই, সেইজন্যে বাংলাছন্দে সেটা চালাতে গেলে কৃত্রিমতা আসেই।[১]

| | | | | |
হেসে হেসে হল যে অস্থির,
| | | | |
মেয়েটা বুঝি ব্রাহ্মণ-বস্তির।

এটা জবরদস্তি। কিন্তু

হেসে কুটিকুটি এ কী দশা এর,
এ মেয়েটি বুঝি রায়মশায়ের।

এর মধ্যে কোনো অত্যাচার, নেই। রায়মশায়ের চঞ্চল মেয়েটিক কাহিনী যদি বলে যাই লোকের মিষ্টি লাগবে, কিন্তু দীর্ঘে হ্রস্বে পা ফেলে চলেন যিনি তাঁর সঙ্গে বেশিক্ষণ আলাপ চলে না। যেটা একেবারে প্রকৃতিবিরুদ্ধ তার নৈপুণ্যে কিছুক্ষণ বাহবা দেওয়া চলে, তার সঙ্গে ঘর করা চলে না।

 ‘জনগণমনঅধিনায়ক’— ওটা যে গান। দ্বিতীয়ত সকল প্রদেশের কাছে যথাসম্ভব সুগম করবার জন্যে যথাসাধ্য সংস্কৃত শব্দ লাগিয়ে ওটাকে আমাদের পাড়া থেকে জয়দেবীয় পল্লীতে চালান করে দেওয়া হয়েছে। বাংলা শব্দে এক্‌সেন্‌ট্ দিয়ে বা ইংরেজি শব্দে না দিয়ে কিংবা সংস্কৃত কাব্যে দীর্ঘহ্রস্বকে বাংলার মতো সমভূম করে যদি রচনা করা যায় তকে কেবলমাত্র ছন্দকৌশলের খাতিরে সাহিত্যসমাজে তার নতুন মেলবন্ধন

  1. তুলনীয়: বাংলার এ-জিনিস...সুব্যক্ত নহে পৃ ৫, সংস্কৃতের অনুকরণে...এই কৃত্রিমতা বেশিক্ষণ সয় না পৃ ১২২।