পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৮
ছন্দ

এখানে চার পর্বের পরে পূর্ণযতি, তার পরেই পুনরাবর্তন। সুতরাং আট পদক্ষেপে (চলনে) এর প্রদক্ষিণ (চাল), এই উক্তিতে বুঝতে হবে এখানে দুই পংক্তির যুক্ত রূপটাই অভিপ্রেত। অন্যত্র (পৃ ১২) ত্রিপদী প্রভৃতি বন্ধের পদবিভাগ অর্থেও চাল শব্দের প্রয়োগ দেখা যায়। দ্রষ্টব্য ‘প্রদক্ষিণ’।

 চৌতাল—দ্রষ্টব্য ‘তাল’।

 চৌপদী (পৃ ১১)—যে ছন্দোবন্ধের প্রতিপংক্তিতে চার পদ অর্থাৎ অর্ধ যতির বিভাগ থাকে, তাকেই বলা যায় চৌপদী। পয়ার (বা দ্বিপদী) এবং ত্রিপদীর ন্যায় চৌপদীও ত্রিবিধ: সাধু ছন্দের অক্ষরগোনা, প্রাকৃত-বাংলার সিলেব্‌ল্‌গোনা এবং মাত্রাবৃত্তের কলাগোনা।

প্রথম শীতের মাসে |
শিশির লাগিল ঘাসে |
হুহু করে হাওয়া আসে |
হিহি করে কাঁপে গাত্র।

এই পংক্তিটিতে চার পদ সুস্পষ্ট। প্রতিপদে ‘অক্ষর’সংখ্যা হিসাবে আট মাত্রা। ‘হাওয়া’ শব্দের ‘ওয়া'র উচ্চারণরূপ wa, সুতরাং এক অক্ষর। এটা সাধু ছন্দের চৌপদী পংক্তি। প্রাকৃত-বাংলার চৌপদীর দৃষ্টান্ত এই (পৃ ১৭)।—

কই পালঙ্ক, কই রে কম্বল |
কপ্‌নি-টুকরো রইল সম্বল |
একলা পাগলা ফিরবে জঙ্গল |
মিটবে সংকট ঘুচবে ধন্দ ৷

প্রতিপদে সিলেব্‌ল্‌সংখ্যা হিসাবে আট মাত্রা। এর সাধুরূপ দ্রষ্টব্য ১৮ পৃষ্ঠায়। এর মাত্রাবৃত্ত রূপ হতে পারে এ-রকম—