কতকগুলি অংশে বিভক্ত করা হয়। এই কালপর্ব গানভেদে বিভিন্ন রকমের হয়। এই কালপর্ব বা তালবিভাগের বৈচিত্র্যের দ্বারাই গানের ছন্দ নিয়ন্ত্রিত হয় (পৃ ২১, ২১৭)। গানের তালবিভাগ ও পদ্যের পর্ব- বা উপপর্ব-বিভাগ মূলত একজাতীয় বস্তু। গানের কালপরিমাপের একক বা য়ুনিটকে বলা হয় মাত্রা। মাত্রার আয়তন আপেক্ষিক; সুরপ্রবাহের লয় অর্থাৎ গতিবেগের দ্রুততা বা মন্থরতা-ভেদে একই গানের মাত্রা হ্রম্ব বা দীর্ঘ হয়। কালপর্বের মাত্রাসংখ্যা ও আবর্তনের ভিন্নতা অনুসারে গানের তালের বিভিন্ন নাম আছে। এই গ্রন্থোক্ত তালগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া গেল।
একতালা— ত্রিমাত্রক বিভাগের তালবিশেষ। একতালায় চারটি করে বিভাগ থাকে এবং প্রত্যেক বিভাগে থাকে তিন মাত্রা (পৃ ৯৭-৯৮)। মোট মাত্রাসংখ্যা বার। একতালা নামের সার্থকতা সুস্পষ্ট নয়।
কাওয়ালি— এর প্রতিবিভাগ চতুর্মাত্রক। কাওয়ালির তালে চারটি বিভাগ এবং প্রত্যেক বিভাগে চার মাত্রা (পৃ ১২)। মোট মাত্রাসংখ্যা ষোল। কাওয়ালির এক বিভাগে ফাঁক ও তিন বিভাগে তালি পড়ে। এজন্য কাওয়ালিকে তেতালা বলে গণ্য করা হয়।
চৌতাল— এই তাল ছয়টি দ্বিমাত্রক বিভাগ নিয়ে গঠিত। একতালার ন্যায় এরও মোট মাত্রাসংখ্যা বার। এর দ্বিতীয় ও চতুর্থ ভাগে ফাঁক, বাকি চার ভাগে তালি। এজন্যই এর নাম চৌতাল।
ঝাঁপতাল— এটি হচ্ছে দশ মাত্রার তাল। এর মাত্রাবিদ্যাস হয় দুই-তিন+দুই-তিন এই পর্যায়ক্রমে। চিত্ত আজি | দুঃখদোলে ইত্যাদি দৃষ্টান্তটি (পৃ ১৫৫) প্রচলিত ঝাঁপতাল নয়। কেননা এর মাত্রাবিন্যাসক্রম হচ্ছে তিন-দুই+ তিন-দুই। তবে এটিকে ঝাঁপতালের প্রকারভেদ বলে গণ্য করা চলে। রবীন্দ্রনাথ এই ঝাঁপতালজাতীয় বিশিষ্ট তালটির নাম দিয়েছেন ‘ঝম্পক’।