পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫২
ছন্দ

কাল ছিল ডাল | খালি—।
আজ ফুলে যায় | ভরে—।

এ হচ্ছে পর্ববিভাগ, প্রতিপর্বে ছয় মাত্রা। অর্থাৎ এটি ‘ছয় মাত্রার কায়দায়’ পড়ার বিভাগ। এর প্রতিউপপর্বে তিন মাত্রা। কিন্তু এখানে উপযতি লোপ পেয়েছে। তাই দণ্ডচিহ্নের দ্বারা তিন মাত্রার উপপর্ব বিভাগ না দেখিয়ে একেবারে পর্ববিভাগই দেখানো হয়েছে। ‘তিন মাত্রার তালে’ পড়া আর ‘ছয় মাত্রার কায়দায়’ পড়া মূলত একই। তিন মাত্রার উপপর্ব নিয়েই ছয় মাত্রার পর্ব গঠিত হয়।

প্রথম: শীতের | মাসে—।
শিশির: লাগিল | ঘাসে—।

এ হচ্ছে উপপর্ব-বিভাগ। এখানে উপযতি লোপ পায়নি (পৃ ১১)।

 এই প্রসঙ্গে ‘নটরাজ’ কাব্যের (১৯৩১) ‘মনের মানুষ’ কবিতাটিও স্মরণীয়। গ্রন্থের পাদটীকায় কবি স্বয়ং এই কবিতাটির ছন্দোবিশ্লেষ করেছেন এভাবে।— “এই ছন্দ চৌপদীজাতীয় নহে। ইহার যতিবিভাগ নিম্নলিখিতরূপে—

কত না দিনের | দেখা
কত না রূপের | মাঝে।
সে কার বিহনে। একা
মন লাগে নাই | কাজে।”

অর্থাৎ এটিকে চার মাত্রার কায়দায় পড়তে হবে না, ছয় মাত্রার কায়দায় পড়াই কবির অভিপ্রেত। চিহ্নযোগে দেখানো না হলেও এর তিনমাত্রাউপপর্বের বিভাগ সহজেই বোঝা যায়। চতুর্থ লাইনে এই বিভাগ কানে লাগে না। কারণ এখানে উপযতি লুপ্ত হয়েছে।

 অপারিভাষিক অর্থে পদ মানে পূর্ণযতিনির্দিষ্ট ছন্দোবিভাগ অর্থাৎ পংক্তি। যেমন—চতুর্দশপদী কবিতা। রবীন্দ্রনাথ এই অর্থে ই পদ