সিলেব্ল্ অর্থে যেমন নানা স্থানে মাত্রা শব্দের ব্যবহার হয়েছে, তেমনি আবার স্থলবিশেষে মাত্রা অর্থে সিলেব্ল্ শব্দটির ব্যবহারও দেখা যায়।
এই যে এল | সেই আমারি | স্বপ্নে দেখা | রূপ।
এবং
দুই জনে জুঁই | তুলতে যখন | গেলেম বনের | ধারে।
ইত্যাদি দুটি দৃষ্টান্তে (পৃ ৫৫-৫৬) এই্, সেই্, দুই্, জুঁই্, স্বপ্, রূপ্, তুল্, খন্ প্রভৃতি ধ্বনি ‘এক সিলেব্ল্এর বেশি মান দাবি করলে না’ এবং ‘যুগ্মধ্বনিগুলো এক সিলেব্ল্এর চাকার গাড়িতে অনায়াসে ধেয়ে চলেছে’। মানে, ‘এই’ প্রভৃতি সিলেব্ল্গুলি এক মাত্রা বলেই গণ্য হয়েছে, দুই মাত্রার মর্যাদা পায়নি। দুটি দৃষ্টান্তই সিলেব্ল্মাত্রার অ-সাধু পয়ার। পারিভাষিক নাম দলমাত্রিক পয়ার। দ্বিতীয়টি প্রায় বেফাঁক।
মনে পড়ে | দুই জনে | জুঁই তুলে | বাল্যে।
এবং
কাঁধে মই, | খলে ‘কই’ | ভূঁইচাপা | গাছ’।
এই দুই দৃষ্টান্তে (পৃ ৫৫-৫৬) দুই, জুঁই প্রভৃতি ধ্বনি ‘দুই সিলেব্ল্এর টিকিট পেয়েছে’। মানে, এই সিলেব্ল্গুলি দুই কলামাত্রা বলে গণ্য হয়েছে, এক সিলেব্ল্মাত্রা বলে নয়। কারণ দুটি দৃষ্টান্তই কলামাত্রিক পদ্মার।
যুগ্মধ্বনি কলামাত্রার ছন্দে দুই কলামাত্রা বলে গণ্য হয়, আর সিলেব্ল্মাত্রার ছন্দে গণ্য হয় এক সিলেব্ল্মাত্রা বলে।
কলামাত্রা এবং সিলেব্ল্মাত্রার ন্যায় অক্ষরমাত্রার কথাও পাওয়া যায় নানা প্রসঙ্গে। সাধু বাংলার ছন্দগুলিতে ‘প্রত্যেক অক্ষরটি এক মাত্রা বলিয়া গণ্য হইয়াছে’ (পৃ ৩)। যেমন—
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।