নিঠুর পীড়নে যার
তন্দ্রাবিহীন কঠিন দণ্ডে মথিছে অন্ধকার
তুলিছে আলোড়ি | অমৃত জ্যোতি | তাঁহারে নমস্ | কার।
এখানে অমৃত শব্দকে অম্ম্রিত রূপে উচ্চারণ করা যেতে পারে। কিন্তু রবীন্দ্রসাহিত্যে অমৃত শব্দের এ-রকম প্রয়োগ দেখা যায় না। সুতরাং অমৃত এবং জ্যোতি শব্দের মধ্যে ব্যঞ্জনসংঘাত স্বীকার করে নেওয়া অর্থাৎ অমৃতজ্জ্যোতি উচ্চারণই কবির অভিপ্রেত ছিল বলে ধরতে হবে। নিভৃত, প্রকৃত প্রভৃতি শব্দেও ব্যঞ্জনসংঘাত বর্জনীয় | যথা—
যকৃৎ যদি বিকৃত হয়
স্বীকৃত হবে, কিসের ভয়,
না হয় হবে পেটের গোলযোগ।
কিন্তু পিতৃ, মাতৃ, ভ্রাতৃ, নেতৃ প্রভৃতি শব্দে ব্যঞ্জনসংঘাত মেনে নেওয়াই প্রচলিত রীতি, এমন কি রবীন্দ্রসাহিত্যেও। যথা—
‘আমরা হইলাম | পিতৃহারা’, | কাঁদিয়া কহে দশ | দিক্,
‘সকল জগতের | বন্ধু যাঁরা | তাঁদের শত্রুরে | ধিক্’।
মাতৃভূমির লাগি | পাড়া ঘুরে মরেছে,
একশো টিকিট বিলি | নিজ হাতে করেছে।
এখানে পিতৃ ও মাতৃ শব্দের উচ্চারণ যথাক্রমে পিত্রি ও মাত্রি। বাংলা ছন্দের রাজ্যে নেতৃত্ব ও নেত্রীত্ব অভিন্ন। কারণ বাংলা উচ্চারণে নেতৃ ও নেত্রী দুএরই উচ্চারণ নেত্রি।
বলা প্রয়োজন যে, রাবীন্দ্রিক মাত্রাবৃত্ত অর্থাৎ সরল কলামাত্রিক